পিবিএ,কুবি প্রতিনিধি: প্রতিবছর শরৎকাল ও ভাদ্রমাসের মাঝামাঝিতে কাশফুলে ভরে ওঠে কুবি। কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পুলকিত করেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার।কাশফুলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে ধরা দেয় ভিন্ন নন্দনে। বাতাসে শুভ্রতা ছড়ানো এমন রূপ লাবণ্যের প্রেমে পড়তে বাধ্য যেকোনো প্রকৃতি প্রেমী।
শরৎ ঋতুকে নিয়ে কবি-সাহিত্যিকরা অনেক সাহিত্য রচনা করেছেন। শরতের নিসর্গ প্রকৃতি ঘিরে কবিগুরুর কত কবিতা, কত গান বাংলা সাহিত্যকে সুবাসিত করেছে। তাইতো শরতের বন্দনায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিমোহিত হয়েছেন বারবার। কবির ভাষায়, ‘নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা?’
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন টিলাগুলোতে মাথা উঁচু করে দোল খাচ্ছে শুভ্র সাদা এই কাশফুল। সেখানে প্রকৃতির নিয়মেই প্রতিবছর তৈরি হয় কাশফুলের বাগান। এখানকার শুভ্রতায় আকাশের সাদা ঘন মেঘ যেনো পেঁজা তুলোর মতো ধরণীতে নেমে আসে কাশফুল হয়ে। দূর থেকে দেখে মনে হয় যেন কোনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা এক কাল্পনিক ছবি। রাস্তার পাশে কাশফুলের এমন সৌন্দর্য নজর কাড়ছে শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীদের।
শরতের এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নিলয় সরকার বলেন, কংক্রিটের বিপরীতে লাল মাটির ক্যাম্পাস যেন সর্বস্ব দিয়ে ধারণ করেছে শরৎকে। কাশফুলের শুভ্রতায় ছেঁয়ে গেছে টিলা গুলো। সবুজ দূর্বাঘাসে ঢাকা মাঠ যেনো আনন্দে ডাকছে আমাদের। আর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা খেলছি, হাসছি, খোশগল্পে ফিরছি শৈশবে। এ যেন স্বর্গীয় সুখ।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী চৌধুরী সুপ্রতীক বড়ুয়া বলেন, বর্ষার কদমফুলের দিন শেষ হবার পরপরই শুরু হয় শরতের কাশফুলের দিন। কাশফুল যেন পৃথিবীর স্বর্গীয় সৌন্দর্য্যের একটি। সাদা এই ফুল আর শরতের সাদা মেঘের আকাশ মিলেমিশে এক অপরূপ সৌন্দর্য্যের পরিবেশ সৃষ্টি করে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠি চত্বরের মরচেধরা চিঠি বক্সটা অনেক দিন ধরে বন্ধ,শরতের চিঠি ক্যাম্পাসে আসুক আর না আসুক তবুও কাশফুল ফুটবে এই ক্যাম্পাসে। আন্দোলন পরবর্তী ঝড়-ঝঞ্ঝার পরে এই নতুন দেশে আমরা এই কাশফুল গুলোকে শিরোনামহীনের ভাষায় বলতেই পারি- “এই অবেলায় ফোঁটা কাশফুল, নিয়তির মতো নির্ভুল, যেন আহত কোনো যোদ্ধার বুকে বেঁচে থাকা এক মেঘফুল।”