শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচি থেকে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদি মার্চ কর্মসূচি শেষে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
এর আগে এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শহীদি মার্চ শুরু হয়ে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট-সায়েন্সল্যাব-কলাবাগান-মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-সংসদ ভবন হয়ে ফার্মগেট-কারওয়ান বাজার-শাহবাগ-টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
শহীদি মার্চে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনতা অংশ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, এই আন্দোলনের শহীদ ভাইদের রক্ত এবং তাদের স্পিরিট কখনো বৃথা যেতে দেবো না। এখনো অনেক ফ্যাসিস্টদের অস্তিত্ব রয়েছে, আমরা ফ্যাসিস্টদের এবং ফ্যাসিবাদী চিন্তা লালন করা মানুষদের বলতে চাই, এই স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। কোনো চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট এই বাংলাদেশে হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে ভাইয়েরা এই স্বাধীনতা আনতে রক্ত দিয়েছেন, আমরা তাদের রক্তের মূল্য দিতে যে কোনো সময় নিজেদের রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।’
আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য এই আন্দোলনে আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন। দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না এমন স্বপ্ন নিয়ে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের ভাইয়েরা নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা আমাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করিনি। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। দেশকে পুনর্গঠনের যে লড়াই সেটি আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।’
এ সময় সমন্বয়করা ৫ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো:-
১. গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. শহীদদের পরিবারকে দ্রুত আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দিতে হবে।
৩. প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. গণভবনকে জুলাই স্মৃতি যাদুঘর ঘোষণা করতে হবে। এবং
৫. রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে।