পিবিএ,কুবি প্রতিনিধি: নানা সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাজনৈতিক কোন্দল, সমন্বয়হীনতার অভাবে গড়ে উঠেনি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। তবে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা দাবি তুলছে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠনের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় দুইটি মিটিংয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ৭১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটি এক প্রকার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে রূপান্তরিত হয়। ঘোষণা পরবর্তী সময়ে তোপের মুখে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের আগে আগে নতুন করে কিছু কার্যক্রম করার চিন্তা করা হলেও শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক কোন্দল, প্রভাব বিস্তারের কারণে আর হয়ে উঠেনি।
এই বিষয়ে বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীও সহকারী অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ রাজু বলেন, ‘বর্তমানে কুবিয়ানদের জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেটা আমরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় দেখেছি। তখন আমরা আমাদের বড়ভাইয়ের থেকে সহযোগিতা নিয়ে কুমিল্লায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা করাতে পেরেছিলাম। তাই আমার আহ্বান থাকবে আমাদের প্রথম ব্যাচের ভাই-আপুরা এতে সদিচ্ছায় এগিয়ে আসবেন। আমরা পরবর্তী ব্যাচের যারা আছি তারা মিলে একটি গঠনমূলক কার্যক্রম অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কমিটি যেন গঠন করতে পারি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাবেক শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম হানিফ বলেন, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সাবেক ছাত্রছাত্রীদের অক্সিজেন বলা চলে। ২০১৮ সালে কমিটি হলেও ক্ষমতাশীন রাজনৈতিক দলের কারণে মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০২০ সালে সমাবর্তনের আগে ফের উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক কারণে আর গঠন করা যায়নি। সাবেক-বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণের জন্য রাজনীতি মুক্ত অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা জরুরী। তাই ক্রিয়াশীল সাবেকদের মাধ্যমে নতুন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা এখনই সময়।
আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, অ্যালামনাই এসোসিয়েশন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে, বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্পর্ক স্থাপন করে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ বছরের ইতিহাসে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠিত না হওয়া একটি দুঃখজনক বিষয়। অ্যালামনাই এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা হলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, নেটওয়ার্কিং এবং তথ্য আদান-প্রদানকে সহজতর করবে। এই সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়তা করে এবং ভবিষ্যতে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। তাই দ্রুত একটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা প্রয়োজন।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে বর্তমান শিক্ষার্থী ফাহিম আবরার বলেন, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রতিটা বিদ্যাপীঠের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন এবং অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্কুল-কলেজ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যালামনাই থাকলেও দুঃখজনকভাবে কুবিতে এমন একটি প্ল্যাটফর্মের অনুপস্থিতি আমরা দেখছি। কুবির ভবিষ্যত এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সাবেক শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসার সুযোগ করে দেয়া এবং সকল শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি দায়বদ্ধতা তৈরির লক্ষ্যে এই প্ল্যাটফর্ম খুবই প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।