বায়তুশ শরফ লহরী জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা

বহিষ্কৃত মাদ্রাসা সুপারকে পূনরায় চায় না অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা

মোঃ এমদাদ উল্যাহ,চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা): কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের বায়তুশ শরফ লহরী জব্বারিয়া মাদ্রাসায় দূর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত সুপার মোঃ আবুল কাছেমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক নেতৃবৃন্দ, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে মাদ্রাসা দখলের চেষ্টা ও সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে সাবেক পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাসী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও শ্রীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ এমদাদুল হক শাহী। লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবুল কাছেম প্রায় ১৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বহিস্কৃত হয়েছিলেন।

বহিস্কার প্রতিরোধ করতে তিনি ২০১০ সালের ৩০ মে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। ছলছাতুরির আশ্রয় নিয়ে আবুল কাছেম বহিস্কারের আদেশ ও পদত্যাগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদ্রাসার তৎকালীন সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম ২০১০ সালের ২৪ জানুয়ারি আবুল কাছেমের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।

মাদ্রাসা সূত্রে আরও জানা গেছে, মাওলানা আবুল কাছেম ১৯৮৭ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে মাদ্রাসার সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দায়িত্বপ্রাপ্তকালে তিনি শিক্ষক-কর্মচারিদের অনুদানের ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, পরীক্ষার ফি বাবদ ৬ লাখ ১৩ হাজার ৪২৭ টাকা, ২০০৭ সালে টিউশন ফি বাবদ ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯০ টাকা, এলাকাবাসীর অনুদানের ৭০ হাজার টাকা, নির্বাচনী পরীক্ষার ফি ৫৪ হাজার ৮৪০ টাকা, শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৪৫ টাকা, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের থেকে দানকৃত ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮২০ টাকা, মাদ্রাসা শিক্ষকদের ভবিষ্যত তহবিল থেকে ১২ হাজার টাকা, আরও একটি অনুদানের ১৩ হাজার টাকা, মাদ্রাসার এফডিআরের ১৪ হাজার ২৫৯ টাকাসহ ১৬ লাখ ৯০ হাজার ২৮১ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ২০১২ সালের ৬ আগস্ট কুমিল্লার আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি ২০১৩ সালে তদন্ত করে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক সামছুদ্দিন অভিযোগপত্র প্রদান করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আবু তাহের, পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য মাওলানা আবুল হাশেম, এয়াকুব শরীফ, দাতা সদস্য শফিকুর রহমান মজুমদার, স্থানীয় আবু তাহের, মোঃ মিঠু, আবদুল বারিক, শাহজাহান, মারুফ হোসেন, মাঈন উদ্দিন, কাজী আবদুল কাদের, আবদুল হামিদ, আবাদ মিয়া, তিতা মিয়া, ছিদ্দিকুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শহীদ মিয়া, নুনু মিয়া, আমিনুল ইসলাম, হাজী মমতাজ মিয়া, মাওলানা আবুল বাশার, জসিম উদ্দিন, ছাদেক মিয়া, রহিম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, এমদাদ উল্যাহ, এনায়েত উল্যাহ, সাইফুল ইসলাম, আবদুল মতিন, ওমর ফারুক মজুমদারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সংবাদ সম্মেলন শেষে বহিষ্কৃত সুপার আবুল কাছেমের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন...