বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন

অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না গুলিবিদ্ধ রিকশাচালকের

পিবিএ,তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে মিরপুর মডেল থানার সামনে পুলিশের গুলিতে আহত হয় রিকশাচালক সোলায়মান। অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।

সোলায়মান সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের মাছিয়াড়া গ্রামের মৃত মোনতাজউদ্দিন সরদারের ছেলে। বর্তমানে সে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

সুত্রে জানাযায়, সংসারে অভাবের তাড়নায় গত কয়েক বছর আগে রিকশাচালানোর উদ্দেশ্যে ঢাকায় যান সোলায়মান। সে ঢাকার মিরপুর-২ এর ষ্টেডিয়ামের পাশে বসবাস করতেন এবং রিক্সা চালিয়ে জীবন-যাপন করতেন। প্রতিদিনের ন‍্যায় সরকার পতনের শেষ দিন ৫ আগস্ট রিকশা নিয়ে বাসা থেকে বেলা ১২টার দিকে বের হয়। বাসা থেকে বের হয়ে মিরপুর মডেল থানার সামনে আসলেই পুলিশের গুলাগুলির মধ‍্যে পড়ে গুলি বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সোলায়মান। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে তার পায়ে তিন জায়গায় ভেঙ্গে যায়।এসময় পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মহিলা পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে পার্শবর্তী ইসলামী ব‍্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

গুলিবিদ্ধ সোলায়মান জানান, সংসারে অভাবের তাড়নায় রিকশা চালানোর উদ্দেশ্যে কয়েক বছর আগে ঢাকায় যান। ঢাকার মিরপুর ষ্টেডিয়ামের পাশে বসবাস করে রিকশা চালিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের ন‍্যায় সরকার পতনের শেষ দিন ৫ আগস্ট জীবিকার তাগিদে রিকশা নিয়ে বেলা ১২টার দিকে হন। মিরপুর মডেল থানার সামনে আসলেই পুলিশের গুলাগুলিতে তার বাম পায়ে একটি গুলি লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পুলিশের লাঠি চার্জে তার পায়ের তিন জায়গায় ভেঙ্গে যায়।এসময় পাশদিয়ে হেঁটে যাওয়া এক মহিলা পথচারী তাকে উদ্ধার করে পার্শবর্তী ইসলামী ব‍্যাংক হাসপাতালে রেখে আসেন। সেখান থেকে জরুরী চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে কোন ছিট খালি না থাকায় ৭ দিন বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে পরে গত ১২ আগস্ট পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে ৯ দিন চিকিৎসা নিতে বেড ভাড়াসহ ঔষধ কিনতে ২ হাজার ৯২৫ টাকা খচর হয়। এত ব‍্যায় ভার বহন করা তার পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় পঙ্গু থেকে রিলিজ নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসেন।

বর্তমানে তিনি তালা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এসময় অসহায় রিকশাচালক সোলায়মান জীবনে বেঁচে থাকার আকুতি জানিয়ে সকলের কাছে সহোগীতা ও দোয়া কামনা করেন।

এবিষয়ে উদ্ধারকারী পথচারী স্বর্ণা আক্তার জানান, তিনি মিরপুর -১০ নাম্বারে বসবাস করেন। নিত্য প্রয়োজনীয় একটা কাজে ঘটনাস্থালে এসে রাস্তার উপর সোলায়মানকে পড়ে থাকতে দেখেন।এসময় তিনি অন্যদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী ইসলামী ব‍্যাংক হাসপাতালে রেখে আসেন।পরে তার কি হয়েছে সেটা তার জানা নেই বলেও জানান।

ইসলামী ব‍্যাংক হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ সানোয়ার হোসেন জানান, সোলায়মানকে হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে তিনি জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।পরে তাকে নিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে যান।তবে হাসপাতালে ছিট না থাকায় ৭ দিনের ঔষধ কিনে দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন। পরে ১২ আগস্ট তাকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করে অপারেশন এর ব‍্যবস্থা করেন তিনি।সোলাইমানের সুস্থতার ব্যাপারে তিনি বলেন সুস্থ হতে সময় লাগবে কারন তার পায়ে একটা গুলি ও তিন জায়গায় ভাঙ্গা রয়েছে। তার চিকিৎসা একটু ব‍্যায় বহুল।

এবিষয়ে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাক্তার রাজিব সরদার জানান, অসুস্থ সোলায়মানকে আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সুস্থ হতে সোলাইমানের আরো উন্নত চিকিৎসার দরকার।

আরও পড়ুন...