পিবিএ,তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে তালা প্রেসক্লাব হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘোষ সনৎ কুমার প্রায় ১৬ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সেই সুবাদে ঘোষ সনৎ ও তার স্ত্রী রুপা ঘোষ আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
সরকারী দলের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রী রুপা রানী ঘোষকে উপজেলার জেএনএ পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন।
তিনি আরও বলেন, ঘোষ সনৎ ও তার স্ত্রী রুপা ঘোষ দুজনে যোগসাজসে শত শত কোটি টাকা অবৈধ উপায়ে উপার্জন করে চোরাই পথে ভারতে পাচার করেছেন। বাকী টাকা সনৎ ঘোষের স্ত্রী, শ্যালক ও ভাগনের নামে ও বেনামে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শাহাপুর গ্রামে ও বাজারসহ অন্যান্য স্থানে শতাধিক বিঘা জমি ক্রয়সহ বহুতল বিশিষ্ট বাড়ী নির্মান, গরুর খামার, মাছের ঘের ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
এছাড়াও উপজেলায় অবস্থিত বিভিন্ন ব্যাংক থেকে করোনাকালীন সময়ে বিশেষ প্রণোদনার আওতায় স্বল্প সুদে টাকা উত্তোলন করে চড়া সুদে পোষ্ট অফিসসহ বিভিন্ন ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখেছেন। ঘোষ সনৎ কুমার দীর্ঘ মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে টাকা আত্মস্বাৎসহ নিজ প্রকল্প গ্রহনের সময় ৩/৪ গুন বেশি বরাদ্ধ বাড়িয়ে নেন। উপজেলা রাজস্ব তহবিলের প্রায় ৭০ কোটি টাকা উত্তোলন করে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস থেকে আরএফকিউ এর মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি করে সেই প্রকল্পের কাজ যেনতেন করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানের নামে এডিপি, টিআর, কাবিখা প্রকল্প গ্রহন করে কোন কাজ না করেই সরকারি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
লিখিত বক্তব্য তিনি আরো বলেন, তালা সেটেলমেন্ট চলাকালে অফিসারদের উপর অবৈধভাবে চাপ সৃষ্টি করে অবৈধ টাকা উর্পাজন করেছেন এই ঘোষ সনৎ। এখানেই শেষ নয় গ্রামে বিদ্যুৎতায়নের নামে নিম্ম মানের সোলার ষ্ট্রিট লাইট স্থাপনে সহযোগিতা করে প্রায় কোটি টাকা কমিশন হাতিয়ে নেন ।
এছাড়া গত ২০১৮ সালে অবৈধভাবে ভারতের বারাসাতে বাড়ি তৈরির খরচের টাকা পাচারকালে ভোমরা সীমান্তে স্ত্রী রুপা ঘোষ আটক হয়।
এসময় ঘোষ সনৎ সরকারি দলের ক্ষমতার দাপট ও তৎকালীন সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে স্ত্রী রুপাঘোষকে ছাড়তে বাধ্য হয় প্রশাসন।
ঘোষ সনৎ কুমার ও তার স্ত্রীর নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা শহরে বিলাশ বহুল এলাকা সল্টলেকে শত কোটি টাকা ব্যয়ে প্লট ক্রয় ও কোটি কোটি টাকা ভারতে পাচার করেছেন বলেও লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট ঘোষ সনৎ কুমার ও তার স্ত্রী রুপা ঘোষের অনিয়ম ও দূর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহনের জোর দাবি জানান উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃশফিকুল ইসলাম।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার পলাতক নরয়েছেন।এবিষয়ে জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন যোগাযোগ করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।