ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে বিজিবি সদস্যরাও আহত হন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন বিজিবির এক সদস্য নিহত এবং ১০৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পুলিশের গুলিতে বিজিবির বেশকিছু সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিজিবি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সার্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় একজন বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। র‍্যাবে দুজন বিজিবি সদস্য ডেপুটেশনে ছিলেন, তারা নিহত হয়েছেন। বিজিবির মোট ১০৩ জন সদস্য আহত হন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১০৩ জন সদস্যের মধ্যে বেশকিছু সদস্য আহত হয়েছেন পুলিশের গুলিতে। একই জায়গায় দায়িত্ব পালনকালে এমন ঘটনা ঘটে। তবে ভাগ্য ভালো ছিল এগুলো সব ছররা গুলি ছিল। বাকি যারা আহত ছিলেন তারা খুব বেশি গুরতর আহত নন। বেশিরভাগই সুস্থ হয়েছেন।’

পুলিশের মতো বিজিবির কোনো সদস্য পলাতক আছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিজিবির কোনো সদস্য পলাতক নেই। বিজিবির কোনো অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট হয়নি। তবে আমাদের বেশকিছু গাড়ি পুড়ে গেছে।’

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘বিজিবির জনবল প্রায় ৫৭ হাজার। পুরো বিজিবি সদস্যের ৬ শতাংশের কিছু বেশি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মোতায়েন ছিল। কেন এত কম মোতায়েন হয়েছে সেজন্য আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আগের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের নেতাদের কাছে কৈফিয়ত ও জবাবদিহি দিতে হয়েছে অসংখ্যবার।’

‘পুলিশ যে ভূমিকা পালন করছে সেই ভূমিকা বিজিবি অনেকক্ষেত্রে ইচ্ছে করে পালন করছে না- সে বিষয়ে আমাকে দোষারোপ করা হয়েছে।’

বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অনেকে বিজিবির গেটে মিষ্টি নিয়ে আসছেন। বিজিবির যদিও এপিসির ওপরে অস্ত্র ছিল না। নরমালি কিন্তু এলএমপি বা মেশিনগান থাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনেক আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে আসেন। আহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেখান থেকে আমরা অনেককে আমাদের বিজিবি হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের আটজন এখনো চিকিৎসাধীন। তাদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বিজিবি দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশের চেয়ে বিজিবির ১৫ থেকে ২০ গুণ মরণাস্ত্র বা আগ্রেয়াস্ত্র আছে। বিজিবির কাছে লাইট মেশিগান, মেশিনগান, মর্টার, গ্রেনেড, রকেট বিধ্বংসী কয়েক প্রকারের অস্ত্র রয়েছে। এগুলোর কোনোটাই ছাত্র আন্দোলনে ব্যবহার করা হয়নি। কারণ কখনো সীমান্তে যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি হয়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর আওতাধীন থেকে প্রথম যুদ্ধ প্রতিরোধ বিজিবিকেই করতে হবে।’

‘র‍্যাবের মতো বিজিবিকেও ছাত্র আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল। আন্দোলনের মধ্যে বিজিবির হেলিকপ্টার একদিনের জন্যও ব্যবহার করা হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এসব বলার বা পরিষ্কার করার সুযোগ তখন হয়নি। আমরা তখন কীভাবে দায়িত্ব পালন করেছি, কী রকম চাপ ছিল তা আমাদের কমান্ডাররা জানেন’, যোগ করেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

আরও পড়ুন...