দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমাদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। কোনো জাতিকে উপরে উঠতে গেলে শিক্ষার বিকল্প নেই।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।
মির্জা ফখরুল বলেন, পারিবারিকভাবে আমরা শিক্ষক পরিবার। আমার বাবা, আমি, আমার বড় বোন, আমার ছোট বোন ও শিক্ষকতা করেছি। আমাদের পরিবারের ৯০ শতাংশ মানুষ শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত। এ কারণে আপনাদের সমস্যা বুঝি, শিক্ষকদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করি না।
শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করলে সমস্যার সমাধান হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ছেলেরা যেভাবে লেখাপড়া শেষে পাস করে, তাতে একটি শুদ্ধ বাংলা লিখতে পারে না। শিক্ষা ব্যবস্থা এমন জায়গায় চলে গেছে, সে শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতির উন্নয়নে যে হিউম্যান রিসোর্স দরকার, সেটা আমরা তৈরি করতে পারিনি।
তিনি বলেন, এখন পরিবর্তনের যে দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে যদি পরিবর্তন করতে না পারি সেটা জাতির জন্য চরম হতাশার। আগে শিল্প কারখানা সব জাতীয়করণ করা হয়েছিল কিন্তু সেটা আবার পুনরায় বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে হয়েছে। শিক্ষকদের অনেকেই মনে করেন, এটা কেরানির চাকরির মতো। যারা একটি চাকরির জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের কয়েক লাখ টাকা দিয়েছেন। এটা কি ঠিক হলো? এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনেক দেরি করেছি আমরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি কারণ তারা অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল। যুদ্ধে গুলি করে লাখ-লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। পাকিস্তানি বাহিনী কি পরিমাণ নৃশংসতা চালিয়েছিল সেটা আমি জানি। আমি এটা বলতে পারি না। কারণ আমি নিজেও মুক্তিযুদ্ধ করেছি।
আওয়ামী লীগের শাসনকালে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছিল দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমরা সেখান থেকে বের হয়ে আসছি। সবাই বলছে আমাদের এ দাবি মানতে হবে, ওই দাবি মানতে হবে। আগে কিন্তু আমরা বের হতে পারিনি। আপনারা বলবেন, আমাদের বের হতে দেওয়া হয়নি। ছাত্রদেরও বাধ্য করা হয়েছিল চুপ থাকার জন্য। আমাদেরও বার বার জেলে পাঠানো হয়েছে কিন্তু তারপরও আমরা রুখে দাঁড়িয়েছি।
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মহাসচিব চৌধুরী মূগিস উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ।