আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের ৩২ হাজার ৬৬৬ টি পূজামন্ডপে ২ লাখ ১২ হাজার ১৯২ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।
তিনি বলেন, আনসার সদস্যগণ আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৬ দিন পূজামন্ডপের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তরে শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আনসার বাহিনীর প্রধান।
মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সকল নিরাপত্তা সংস্থার মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় পূজামণ্ডপগুলোতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি জানান,’অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ মন্ডপগুলোতে ৮ জন এবং ‘গুরত্বপূর্ণ’ মণ্ডপে ৬ জন ও ‘সাধারণ’ মন্ডপে ৬ জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া বিশেষ বিবেচনায় ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ ও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মণ্ডপের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ৩২ টি পূজামন্ডপে ৫৩ হাজার ১৪৮ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য ৬ ও ৭ অক্টোবর পর্যন্ত কাজ করবে।
পূজার নিরাপত্তায় এ বছর প্রথমবারের মতো স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে ব্যাটেলিয়ন আনসার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারাদেশে ৬৪ টি জেলায় যেকোন আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাটালিয়ন আনসারদের মোট ৯২টি টিম মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। প্রতিটি টিমে ৬ জন করে সদস্য থাকবে।
আনসারের ডিজি বলেন, পূজায় ৮ দিন নিয়মিত নিরাপত্তা টহলের মাধ্যমে সকল পূজা মন্ডপে নিরাপত্তা সমন্বয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরী সেবা প্রদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরও জানান, এ বছর প্রথমবারের মতো মোতায়েনকৃত সদস্যদের প্রাপ্য ভাতা পূজা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই বিতরণ করা হবে, যা গুরুত্বপূর্ণ ডিউটি সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের আরো বেশী উৎসাহ ও মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এছাড়া শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের স্বার্থে বাহিনীর সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যতীত অন্যান্য সকল সদস্যদের ছুটি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আনসার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব সুষ্ঠুভাবে ও আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করা সম্ভব হবে। এজন্য দেশের সকল নাগরিকদের এই সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সময়োচিত তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি অনেক পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি। সেসব পূজা মন্ডপে আনসার সদস্যরা অধিকতর গুরুত্ব সহকারে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজা মন্ডপের আশেপাশে এবং পূজা মন্ডপে কোন ঘটনা ঘটলে যেন সঙ্গে সঙ্গে তা ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়। এসব ভিডিও আমরা সংগ্রহ করবো যাতে করে কোন ধরনের গুজব ছড়িয়ে না পড়ে।