উপদেষ্টাদের অনেকেই আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান: হাফিজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এ সরকার গঠিত হয়েছে জনরায়ে, জনগণের ইচ্ছায়। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে আমরা ধীরে ধীরে হতাশ হচ্ছি। প্রফেসর ইউনূস দেশের কৃতি সন্তান, বিশ্বব্যাপী তার পরিচিতি। তিনি বিদেশে বাংলাদেশের ফেস, তার চেয়ে যোগ্য ব্যক্তি আমরা এ মুহূর্তে পেতাম না। তিনি ক্ষমতায় থাকতেও চান না, আগেও তাকে অফার করা হয়েছিল, থাকেননি। এখনো যে তিনি খুব উপভোগ করছেন তা মনে হয় না। কিন্তু একটা কথা আমার বলতে হচ্ছে, তার টিম সিলেকশনটা ঠিক হয়নি। তিনি যাদের সঙ্গে নিয়েছেন তাদের অনেকের আজীবন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা আছে। প্রকাশ করতে হয়ত পারেন না কিন্তু ভাবভঙ্গিতে এমনই মনে হয়।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানে জন আকাঙ্ক্ষা : রাষ্ট্র মেরামতে প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ছয়টি যে কমিশন করা হয়েছে এদের প্রজ্ঞাপন করতেই ৬ দিনের বেশি সময় লেগেছে। যেটা দুই দিনের বেশি লাগার কথা নয়। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে যাচ্ছে। পতিত শক্তি আবার ফিরে আসতে চায়। আনসার বাহিনী পর্যন্ত ক্যু করতে চায় এমনই দুর্বল একটা সরকার।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রফেসর ইউনূস একেকজন উপদেষ্টাকে চারটা পাঁচটা করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিশেষ করে এদের কোনো অভিজ্ঞতাই তো নেই। এই ব্যাপারে তাকে চিন্তা করতে হবে। অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্য থেকে ভালোদের নিয়ে দায়িত্ব দেন। দরকার হলে এই যে ছাত্ররা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন যারা করেছে তাদের থেকে আরও লোক নেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের টিমে খেলে এসেছেন অতীতে তাদের আর মন্ত্রিপরিষদে আমরা দেখতে চাই না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার অনেক কথা বলে, কিন্তু একটা কথা তাদের মুখ থেকে শোনা যায় না যে নির্বাচন কবে হবে। ইলেকশন কমিশন কবে গঠন হবে? অরাজনৈতিক এবং বিজ্ঞ লোকদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আইন যদি পরিবর্তন করতে হয় তাহলে তা দ্রুত করা যায়। আমরা সবসময় বলেছি, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, নির্বাচন দেওয়ার জন্য এক বছর সময় যথেষ্ট।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের আর রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যে ক্ষতি করেছে বাংলাদেশের। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বরের পর আমরা মনে করেছিলাম সুন্দর একটা দেশ আমরা পাব। গণতন্ত্র চির দিন থাকবে বাংলাদেশের বুকে, কোনো বৈষম্য থাকবে না। মানবিক মর্যাদা, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার অবিলম্বে প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু যতই দিন গিয়েছে ততই আস্তে আস্তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দূরে সরে গিয়েছে। আমরা পেয়েছি একটা একদলীয় রাষ্ট্র বাকশাল।

সভায় রাষ্ট্র মেরামতের ২৩ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবাট পি কস্টা, জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ প্রমুখ।

আরও পড়ুন...