পিবিএ ডেস্ক: গৃহস্থালি বিভিন্ন পন্য সহ বাড়ী-ঘর তৈরির প্রয়োজনে অনেক ধরণের ঋণ দেয় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো। কিন্তু ঘর বাধার জন্য বর বা কনে যোগার তথা বিয়ের জন্যও ঋণ দিচ্ছে দেশের কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক। আপনি যদি সরকারি বা বেসরকারি যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং আপনার বেতন যদি সর্বনিম্ন ১৫ হাজার টাকা হয় তবে আপনি বিবাহ ঋণ পাবেন। বিয়ে না করে থাকলে বিবাহের আগ্রহ নিয়ে ঋণের উদ্দেশ্যে ব্যাংকগুলোতে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।
যেসব ব্যাংক বিয়ের জন্য ঋণ দিচ্ছে –
আইএফআইসি ব্যাংক: এই ব্যাংকও গ্রাহকভেদে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ‘বিয়ের ঋণ’ দিয়ে থাকে। এ ঋণের মেয়াদ সর্বনিম্ন এক থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর। বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো গ্রাহক তিন বছর মেয়াদের জন্য এক লাখ টাকা ঋণ নেন, তাহলে ওই গ্রাহককে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি বাবদ পরিশোধ করতে হবে তিন হাজার ৫৪২ টাকা।
ট্রাস্ট ব্যাংক: ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় বিয়েসহ আরো বেশ কিছু প্রয়োজনে ঋণ-সুবিধা দেয় ব্যাংকটি। তবে ‘বিয়ের ঋণ’ নামে সরাসরি কোনো ঋণ পণ্য নেই। গ্রাহকের প্রয়োজনভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার ঋণ দেয়া হয়। এক থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি এ ঋণের দুই ধরনের সুদের হার রয়েছে। চাকরিজীবীদের বেতনের বিপরীতে যে ঋণ-সুবিধা দেয়া হয়, তার বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৪ শতাংশ। আর ব্যবসায়ীসহ অন্যদের বেলায় এ ধরনের ঋণের বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ।
প্রাইম ব্যাংক: প্রাইম ব্যাংকের বর্ণনা অনুযায়ী, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, বিদেশি সংস্থা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক—সবার জন্য ‘বিয়ের ঋণের’ ব্যবস্থা রয়েছে। ১৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা মাসিক আয় বা বেতনের যে কেউ এ ঋণ নিতে পারবেন।
প্রাইম ব্যাংক গ্রাহক-ভেদে এ ঋণের পরিমাণ সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত এই ঋণ দিচ্ছে। এই ঋণ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য যার মেয়াদ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১২% থেকে ১৫%।
ব্যাংক এশিয়া: বিয়ের জন্য সরাসরি কোনো ঋণ-সুবিধা নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় ঋণ নিয়ে তা বিয়ের খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ব্যাংকটি সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে। ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবীদের এ ঋণ দেওয়া হয় থাকে যার বার্ষিক সুদের হার (১২-১৫)%।
গ্রাহকের চাহিদা-ভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার ঋণ দেয় এই ব্যাংক। (১-৫) বছর মেয়াদি এর ঋণের সুদের হার দুই ধরনের। সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের ব্যক্তিদের এ ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়।
চাকরিজীবীদের জন্য যে ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়, তার বার্ষিক সুদের হার ১৪.৫%। আর ব্যবসায়ীসহ অন্যদের ক্ষেত্রে এই ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১৬.৫%।
ইচএসবিসি ব্যাংক : ব্যাংকের ঋণ পেতে চাকরিজীবী হলে তাঁর আয় কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে আয়ের প্রমাণসাপেক্ষে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা হতে হবে। যদি আবেদনকারী অটো পে অথবা সেপস গ্রাহক হন, তবে মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা হতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ২৩ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবেদনকারী অটো পে গ্রাহক হয়ে থাকলে, তবে মাসিক আয়ের ৬(ছয়) গুণ এবং সেপস গ্রাহক হয়ে থাকলে, মাসিক আয়ের ১০ গুণ পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। বার্ষিক সুদের হার ১৯%। প্রতিটি ঋণই মাসিক কিস্তিতে চার বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। কোনো ব্যক্তিগত গ্যারান্টার বা নগদ জামানতের প্রয়োজন হয় না।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক : ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ব্যক্তিগত ঋণের সাব-প্রোডাক্ট হলো ‘বিয়ের ঋণ’। ঋণের আবেদনকারী চাকুরীজীবী হলে তাঁর মাসিক আয় কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ী হলে তাঁর মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা হতে হবে। বিয়ের আনুষ্ঠানিক খরচের জন্য ব্যাংকটি সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয় যা (১-৫) বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। এবং সুদের হার ১৭.৫%।
ইস্টার্ন ব্যাংক: এই ব্যাংক সরাসরি বিয়ের জন্য ঋণ দেয় না। এর ব্যক্তিগত ঋণের এনি পারপাসের আওতায় যে ঋণ দেওয়া হয়, তাতে আবেদন ফরম পূরণের সময় বিয়ের উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, তা উল্লেখ করতে হবে। ঋণ আবেদনকারীর বয়স ২২ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
পিবিএ/এএইচ