‘নির্বাচন বিমুখতা’ বিপজ্জনক : বি চৌধুরী

বি চৌধুরী

পিবিএ, ঢাকা: ভোটারদের ‘নির্বাচন বিমুখতা’-কে গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও জাতীয় যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সেই সাথে এর কারণ খোঁজার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সদ্য সমাপ্ত সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদে দুই পর্বে নির্বাচনে ভোটারদের অনুপস্থিতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে জাতীয় যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণমূলক ছিল। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন কী অংশগ্রহণমূলক হয়েছে, সব দল কী সেখানে আছে। সরকারকে ভাবতে হবে আজকে উপজেলা নির্বাচন কেন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। তারপর দেখা যাচ্ছে ভোটারদের অনুপস্থিতি অনেক জায়গায় কম।’

বি চৌধুরী বলেন, ‘ভোটাররা কেন অংশগ্রহণ করছে না, কেন কেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর বের করতে হবে। যদি আমরা উদাসীন হয়ে যাই, চিন্তা না করি, তাহলে আমার আশঙ্কা যে, ভোটাররা যদি নির্বাচনবিমুখ হয়ে যায় গণতন্ত্র অনেক বিপদে পড়বে। দেশের মানুষ যদি ভোট দিতেই না যায়, তার চেয়ে বড় বিপদ আর কিছু হতে পারে না।’

উপজেলা নির্বাচনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে নেতৃত্বে লড়াই হচ্ছে- একজন দলীয় মনোনীত প্রার্থী, এক বা একাধিক জন বিদ্রোহী প্রার্থী। এই প্রতিযোগিতা কাদের মধ্যে? দলের মধ্যে, এক দলের প্রার্থী। এটা কী একদলীয় নির্বাচন হয়ে গেল না? প্রাকটিক্যাল হতে হবে। একইভাবে শুধুমাত্র দল সীমাবদ্ধ নির্বাচন কতখানি দেশের গ্রহণযোগ্য হবে-এটা ভাবতে হবে।তাই বলব, কেন এ রকম হচ্ছে- এটা দেখতে হবে।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে। আমরা যে রাজনীতি করি, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করি, আমরা কী উদাসীন হয়ে থাকব এসব প্রশ্নে। এটা হতে পারে না। এটা দেশের জন্য মঙ্গল নয়।’

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে বিরোধী দল প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলকে রাজনীতি করতে দিতে হবে, বিরোধী দলের রাজনীতি নিশ্চিত করতে হবে। এই দায়িত্ব শুধু বিরোধী দলের নয়, এই দায়িত্ব সরকারের।এই সরকার ভালো ও সুন্দর সরকার, জনগণের মঙ্গলকজনক আকাঙ্ক্ষার সরকার, একটি গণতান্ত্রিক সরকার, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সরকার।তাদেরকে ভাবতে হবে কীভাবে বিরোধী দলকে রাজনীতির সুযোগ করে দেয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক সরকার যে দেশে হয়েছে সে দেশে বিরোধী দলের রাজনীতি আছে। বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র সম্পূর্ণ হয় না। এটা আংশিক গণতন্ত্র, যেটা ইনকমপ্লিট ডেমোক্রেসি। কমপ্লিট ডেমোক্রেসি অর্থ্যাৎ সত্যিকার গণতন্ত্রের স্বার্থে আমাদের দেশে বিরোধী দলের ভূমিকা নিশ্চয়ই থাকতে হবে। সরকারকে বড় ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, তাকেই এগিয়ে আসতে হবে। নইলে গর্ভামেন্ট ইজ দ্য ইম্পরটেন্ট অথরিটি যেখানে সরকার ভবিষ্যতে সমালোচিত হবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় জাতীয় যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘কী চেহারায় আমরা বলব যে, গণতন্ত্র আছে। সংসদের দিকে তাকাতে হবে। সেখানে যেন মনে হয় যে, গণতন্ত্র আছে। মাননীয় স্পিকার সংসদ পরিচালনার সময় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন এবং সেখানে অসংসদীয় উচ্চারণ বন্ধ করতে হবে, ঘৃণা বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একইভাবে রাজপথে আমরা দেখব, যখন বিরোধী রাস্তায় দাঁড়াচ্ছে, সংবাদপত্রের দিকে তাকাব সেখানে বিরোধী দলের নাম উচ্চারিত হচ্ছে, তাদের বক্তব্য থাকবে, টেলিভিশনের দিকে তাকাব যখন শুনব তারা সরকারের পাশাপাশি তাদের (বিরোধী দল) বক্তব্য আছে। একে অপরের রাজনীতিকে শ্রদ্ধা করতে হবে।’
পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...