পিবিএ ডেস্ক: ঠিক এক সপ্তাহ আগে শান্তির দেশ বলে খ্যাত নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলায় ট্রাম্প ভক্ত এক শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী জঙ্গীর স্বয়ংক্রিয় বন্দুকের গুলিবর্ষণে অর্ধশত নামাজরত মুসল্লি নিহত এবং আরো প্রায় সমান সংখ্যক আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তাঁদের স্মরণে আজ শুক্রবার দেশটি জুড়ে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করেছেন সেদেশের সকল মানুষ।রাষ্ট্রীয় রেডিও, টেলিভিশনে জুমার নামাজের আজান প্রচারের পর দেশটি জুড়ে নীরবতা পালন করা হয়।
এ ছাড়া হামলার স্থান আল নুর মসজিদে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা অরডার্ন’র নেতৃত্বে শোক প্রকাশে আজ হাজারো মানুষ সমবেত হন।মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আজ নিউজিল্যান্ডের সকল ধর্মের নারীরা মাথায় হিজাব পরিধান।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে স্থানীয় সময় গত শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ আদায়রত মুসলিমদের ওপর আধা স্বয়ক্রিয় বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় অস্ট্রেলীয় যুবক ব্রেনটন টারান্ট (২৮)। এর কিছু পরে সে কাছাকাছি লিনউড মসজিদে হামলা চালায়। দুটি হামলায় ৫০ জন নিহত হন। এর মধ্যে পাঁচ জন বাংলাদেশি সহ আহতও হন ৫০ জন। হত্যার অভিযোগ এনে ব্রেনটনকে কারাবন্দী রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আহডার্ন গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটিতে সব ধরনের আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, স্থানীয় সময় দেড়টায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে জুমার নামাজের আজান প্রচার করা হয়। এরপরই দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়।
আজ আল নুর মসজিদে জুমার নামাজের সময় সমবেত হন হাজার হাজার শোকাহত মানুষ। জুমার নামাজ শুরুর ঠিক আগে আগে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আল নুর মসজিদে পৌঁছান।
জুমার নামাজের ইমামতি করেন ইমাম গামাল ফৌদা। ওই সময় তিনি বলেন, ‘বন্দুকধারী বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। আজ একই জায়গা থেকে তাকিয়ে মানুষের ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পাচ্ছি। আমাদের হৃদয় ভেঙেছে. কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি, আমরা একসঙ্গে আছি। আমাদের মধ্যে বিভক্তি আনতে দেব না কাউকে।’
দেশটি জুড়ে আজ অনেক মসজিদ খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। মসজিদের বাইরে সংহতি প্রকাশ করে মাননবন্ধন করার কথা রয়েছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড আপনাদের সঙ্গে শোকাহত, আমরা এক।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী দেশটির মানুষকে নীরবতা পালনের আহ্বান জানান। তিনি বলেছিলেন, অনেক নিউজিল্যান্ডবাসী হামলার পর থেকে দিনটিকে স্মরণ করতে চেয়েছেন এবং মসজিদে ফিরে আসা মুসলিমদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে চেয়েছেন। নীরবতা পালনের ভাষা একেকজনের একেক রকম হতে পারে। যে যেভাবে ঠিক মনে করবেন সেভাবে পালন করবেন। বাড়ি, কর্মস্থল, স্কুলে যে যেভাবে পারবেন।
গতকাল রাতেই সরকারি কর্তৃপক্ষ আল নুর মসজিদ নামাজের জন্য প্রস্তত করেন এবং আজ নিহত ব্যক্তিদের লাশ একসঙ্গে দাফনের ব্যবস্থা নেন।
পিবিএ/এএইচ