সম্প্রতি পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে দেওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচির পর পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা এবং দেশটির কারাবন্দি নেতা ইমরান খান, তার স্ত্রী বুশরা বিবি এবং পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৮টি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানী ইসলামাবাদের শাহজাদ টাউন, সিহালা, খান্না, শামস কলোনি, নূন, নিলোর, তার্নল এবং বানিগালা থানায় করা হয়েছে এসব মামলা। ইসলামাবাদের পুলিশ বাদি হয়ে এসব মামলা করেছে বলে জানা গেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে গত ২৪ নভেম্বর ইসলাসাবাদ অভিমুখে রওনা দেন পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। ২৭ নভেম্বর মঙ্গলবার তারা ইসলামাবাদের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ডি-চকে এসে পৌঁছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু করেন।
সেখানে পুলিশ ও পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্সের সংঘাত শুরু হয় তাদের। এতে পুলিশ-রেঞ্জার্স এবং পিটিআইয়ের মোট ৬ জন নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্য আগে থেকেই রাজধানীতে সেনা মোতায়েন করেছিল সরকার। পিটিআইয়ের যে কোনো কর্মী-সমর্থককে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য সেনা বাহিনী গুলি চালিয়েছে— এমন সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এদিকে ইসলামাবাদের রেড জোন এবং ডি চকে পৌঁছানোর পর পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং সেনা সদস্যদের হাতে ব্যাপক ধরপাকড়ের শিকার হন পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা। এই ধরপাকড়ের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এই আন্দোলন কর্মসূচির শীর্ষ দুই নেতা খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপোর এবং ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি। তারপর ২৭ ডিসেম্বর রাতেই বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় পিটিআই।
এদিকে, পিটিআই কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরের দিন বুধবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ পলেন, দেশকে উসকানির রাজনীতির কবল থেকে মুক্ত করতে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ নিতে হয়।
বৈঠকে শেহবাজ বলেন, “আমরা পাকিস্তানকে রক্ষা করব, না কি এ ধরনের উসকানিমূলক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবো— সে ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
তার এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ের করা হয় নতুন এই আট মামলা।
বিশৃঙ্খলা-সন্ত্রাসে উসকানি ও দুর্নীতির একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বর্তমানে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের আদিয়ালা কারাগারে আছেন ইমরান খান। তার স্ত্রী বুশরা বিবিও তোশাখানা মামলার আসামি হিসেবে ৯ মাস কারাগারে ছিলেন। কয়েক দিন আগে জামিন পেয়ে মুক্ত হয়েছেন তিনি।