রাজন্য রুহানি,জামালপুর: জামালপুরের মেলান্দহে ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে উমির উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক অভিযুক্ত আনিছুর রহমান মিষ্টারকে একমাসের জন্য স্কুলে আসা নিষেধ করেছেন প্রধান শিক্ষক। তবে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কিনা তা জানায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শাস্তি চেয়ে ছাত্রীরা মৌখিক অভিযোগ দিলে ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবে না বলে ক্ষমা চায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। ক্ষমা চাওয়ার পর ছাত্রীরা মৌখিক অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে স্কুল কতৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি মেলান্দহ উমির উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে ওই শিক্ষক।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ওই স্কুলে গিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নেওয়ার সময় পড়া না পারার কারণে মারার ছলে সহকারী শিক্ষক আনিছুর রহমান মিস্টার ছাত্রীদের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন। ছাত্রীরা বেত দিয়ে শাস্তি দিতে বললেও হাত দিয়েই ছাত্রীদের শরীরে আঘাত করতো ওই শিক্ষক। শাস্তির ছলে ওই শিক্ষক ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতো। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের কাছে ওই শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে মৌখিক অভিযোগ দেয় বিক্ষুদ্ধ ছাত্রীরা। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে অভিযুক্ত শিক্ষক আনিছুর রহমান মিষ্টার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কাছে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না বলে ক্ষমা চায়।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই শিক্ষককে একমাস বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করে দেন প্রধান শিক্ষক মোহন তালুকদার। ঘটনার পর গত ২৭ নভেম্বর থেকে স্কুলে আসছেন না অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর অভিযোগ, ‘স্যার আমাদের ক্লাসের সময় অশালীন আচরণসহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। স্যার বেতের আঘাত না দিয়ে হাত দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করতেন। স্যারের এমন আচরণে আমরা হতভম্ব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ ‘স্যার নানা বাহানায় আমাদের শরীরে হাত দিতেন। আমরা বারবার বলতাম স্যার আমরা অপরাধ করলে বেত দিয়ে মারেন তবুও তিনি নানা বাহানায় শরীরে হাত দিতেন। এ নিয়ে এর আগেও আমরা হেড স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি, তারপরও তিনি এমন করতেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মো. আনিছুর রহমান মিষ্টার মুঠোফোনে বলেন, ‘ছাত্রীদের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি। এ ঘটনার দায়িত্ব হেড স্যার মোহন তালুকদার নিয়েছেন। বিষয়টা তিনি দেখবেন বলেছেন।’
এ বিষয়ে উমির উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোহন তালুকদার বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক আনিছুর রহমান মিষ্টারের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ দিলে ওই শিক্ষার্থীদের নিকট ভবিষ্যতে এমন কিছু করবে না বলে সে ক্ষমা চায়। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ক্ষমা করে দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেয়। এ ঘটনার পর তাকে আগামী একমাস স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এর আগেও এমন অভিযোগ শুনেছি, মৌখিকভাবে ঐ শিক্ষককে শরীরে হাত দেয়া নিষেধ করেছি।’
এ বিষয়ে উমির উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যদি কেউ অভিযোগ দেয়, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’