ঢাকা মহানগরীকে সন্ত্রাস, মাদক ও যানজটমুক্ত করতে জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের কিন্তু এতে জনগণের সহযোগিতা লাগবে জানিয়ে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পুলিশের, সহযোগিতা আপনাদের।’
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পল্লবী থানার সেতারা কনভেনশন হলে পল্লবী থানা এলাকার নাগরিকবৃন্দের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
খোন্দকার নজমুল হাসান বলেন, সবাইকে আইন মেনে চলার প্রবণতা বৃদ্ধি করতে হবে। সবাইকে সহনশীল হতে হবে। জুলাই-আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই ঢাকা মহানগরীকে যদি সন্ত্রাস, মাদক ও যানজটমুক্ত না করতে পারি তাহলে আর কখনোই সম্ভব না। দায়িত্ব পুলিশের, সহযোগিতা আপনাদের, এই দুইয়ের সমন্বয়ের ফলে মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সর্বোচ্চ উন্নতি সম্ভব।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, পুলিশের কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা। আর এলাকাবাসীর কাজ হচ্ছে পুলিশকে সহযোগিতা করা। আমরা সব সময় আপনাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেতে চাই এবং আমাদের দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করতে চাই।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলুন এবং রাস্তার শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহযোগিতা করুন। এক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের কোনো সদস্য যদি অনিয়মে জড়িত হয়, তাহলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে তারা যখন তাদের দায়িত্ব পালন করে তখন প্রতিনিয়ত যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় সেক্ষেত্রে আপনারা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করুন। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই পুলিশের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব না। আর আইনশৃঙ্খলা যদি ঠিক না থাকে তাহলে কোন উন্নয়ন টেকসই হবে না।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও শাহ আলী থানা এলাকার সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে তাদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্যে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে এক নতুন বাংলাদেশ। এ নতুন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলাসহ পুলিশি কার্যক্রমে যেন পূর্ণমাত্রায় গতিশীলতা আসে তার জন্যই এই সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়েছে। আজকের মতবিনিময় সভার লক্ষ্য হলো অত্র থানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নসহ সকলেই যেন সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে পারে তা নিশ্চিত করা। তাই এজন্য প্রয়োজন নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতা।
সভায় পল্লবী থানার নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব কামাল হোসাইন খান বলেন, অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। অপরাধীকে যথাযথভাবে আইনের আওতায় নিয়ে এসে এই সমাজ তথা দেশকে অপরাধমুক্ত করতে হবে। পল্লবী থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অপরাধ নির্মুলে সম্প্রতি গঠিত নাগরিক কমিটিকে আরও সক্রিয় করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-তেজগাঁও বিভাগ) অতিরিক্ত দায়িত্বে, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-মিরপুর বিভাগ) মোঃ রফিকুল ইসলামসহ মিরপুর বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এবং ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।