সোহাগ হাসান জয়,সিরাজগঞ্জ: বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেছেন, বিগত ১৭ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাসায় ঘুমাতে পারেনি। স্ত্রী তার স্বামীর ভালবাসা, সন্তান তার পিতার আদর, স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। স্বৈরাচার অহংকারী হাসিনা বাংলাদেশকে নিজের একার সম্পত্তি মনে করতেন। তিনি বলতেন এদেশ তার দেশ, তার বাবার দেশ। তার বাবা স্বাধীন করেছে। আজ তার অহংকার কোথায় গেল। ভারতের উপর ভর করে হাসিনা টিকে ছিলেন। হাসিনার পতনের পর ভারত বলছে আলু, পেঁয়াজ দিবেন না। তাতে কোনো সমস্যা নেই। আমরা কারো তাঁবেদারি করতে রাজি নই।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের পৌর মাল্টিলেটারাল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপি ও তার অধীনস্থ সকল উপজেলা থানা, পৌর, বিএনপির আয়োজনে মত বিনিময় সভা তিনি একথা বলেন।
আব্দুস সালাম আরও বলেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করেছে, লুটপাট করেছে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দেশ থেকে উৎখাত করেছে। আমরাও যদি একই কাজ করি তাহলে একই অবস্থা হবে। এমন কোন কাজ করা যাবেনা যাতে জনগণ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ইতোমধ্যে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। আপনারা নিজেদের শুধরে নিন। তা নাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বেঁচে থাকা অবস্থায় দেখে যেতে পারলেন যে হাসিনা গণভবনের পেছন দিয়ে কিভাবে হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যায়। খালেদা জিয়াকে এত নির্যাতন করার পরেও সে দেশ ছেড়ে পালায় নাই। তাকে বারবার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ মনে করত সুষ্ঠু নির্বাচন দিলেই বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে। তারেক রহমান এসে দেশ চালাবে সেটা হতে পারে না। কিন্তু হাসিনা জানেনা আজ নয় কাল ক্ষমতার পালা বদল হবে। চলন্ত ট্রেনে আগুন দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। বিএনপির সাথে কখনো আওয়ামী লীগকে মিশাবেন না। বিএনপি আর আওয়ামী লীগ এক নয়।
বিএনপির বর্ষিয়ান নেতা সালাম আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। কিন্তু বিএনপি তা করবে না। বিএনপির যেসব নেতাকর্মীরা বাসায় অবস্থান নিতে পারে নাই ৫ আগস্টের পর তারা নিরাপদে বাসায় অবস্থান করতে পারছেন। আওয়ামী লীগ বলেছিল ক্ষমতার পরিবর্তন হলে দেশব্যাপী ৫/৬ লক্ষ লোক মারা যাবে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বিএনপি নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের সংঘাতে জড়ায়নি। বিএনপি সংঘাতে বিশ্বাসী নয়। স্বৈরাচার হাসিনা খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে বের দিয়েছিলেন। আর আজ জনগণ তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন। বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হত্যা করেছিল। ভারত আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে বাংলাদেশকে তাদের বাজার বানিয়ে রেখেছিল। গণহত্যার আসামি হাসিনাকে ভারত কিভাবে রাখেন তার তীব্র নিন্দা জানান।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদের সভাপতিত্বে ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইদুর রহমান বাচ্চুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট শামীম শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান দুলাল, মকবুল হোসেন চৌধুরী, মোঃ নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, অমর কৃষ্ণ দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি শামীম খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন, নুর কায়েম সবুজ, হারুন অর রশিদ খান হাসান, আলমগীর আলম, দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ প্রমুখ।