দেশের বাইরে যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মইনুল ইসলামকে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোর কথা জানিয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মো. গোলাম রসুল।
মইনুল ইসলামকে ‘অফলোড’ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তিনি দেশের বাইরে যাচ্ছিলেন, তাকে না যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের বিষয় নিয়ে গঠিত কমিশনকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য তাকে এই মুহূর্তে বিদেশ যেতে না করেছি।
“ইমিগ্রেশন থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর তিনি চলে গেছেন, কোথায় গেছেন আমরা জানি না।”
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ইকে-৫৮৭) ফ্লাইটে দুবাই হয়ে টরন্টো যাওয়ার কথা ছিল তার।
এ বিষয়ে মইনুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ‘পরে কথা বলবেন’ বলে জানান।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (তৎকালীন বিডিআর) সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলা ওই ঘটনার পর বাহিনীটির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান মো. মইনুল ইসলাম।
দেড় দশক আগে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ‘তদন্ত কমিশন’ গঠনে সরকারপ্রধানের সায় পাওয়ার কথা সোমবার জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সাত সদস্যের এ কমিশনে বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমানকে প্রধান করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এছাড়া সামরিক বাহিনীর দুজন, সিভিল সার্ভিসের একজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক এবং পুলিশের শীর্ষ এক শীর্ষ কর্মকর্তা কমিশনে থাকছেন।”
মইনুল ইসলাম ডিজির দায়িত্ব পাওয়ার পর বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) করেন। তার সময় ইউনিফর্ম পরিবর্তিত হয় এবং সীমান্ত বাহিনীতে একটি গোয়েন্দা ইউনিট যোগ করা হয়।
এরপর তাকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করা হয় এবং সেনাবাহিনী সদর দফতরে জেনারেল স্টাফ করা হয়। ২০১০ সালের ১০ মে তার জায়গায় নতুন মহাপরিচালক হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন মেজর জেনারেল মো. রফিকুল ইসলাম।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে মইনুল ইসলাম সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন।
বিজিবির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের আগে তিনি জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি) এর প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন।
তার ভাই তাফাজ্জাল ইসলাম বাংলাদেশের ১৭তম প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তার আরেক ভাই ব্যবসায়ী ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম।