আরিফ মোল্ল্যা,ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পানিতে ডুবে এক শিশু নিহত ও আরেক শিশুর শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে ফাতেমা খাতুন (১০) নিহত হয়েছে ও তাসনিম (১১) নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় জিম খাতুন (১০) নামে এক মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ফাতেমা, তাসনিম ও জীম বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে খেলা করছিল। এসময় প্রথমে ফাতেমা পানিতে নেমে সাতার কাটা শুরু করে। এটা দেখে তাসনিমও পানিতে নামে। পানিতে নেমে ফাতেমা ও তাসনিম একজন আরেকজনের ধরাধরি করার সময় তারা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিল। তাদের তলিয়ে যাওয়া দেখে জীম খাতুন নামে তাদের এক খেলার সাথী পুকুরের পানিতে নেমে তাদের উদ্ধার করতে যায়। এসময় জীমও তলিয়ে যাচ্ছিল। এমন মুহূর্ত দেখে পাশে থাকা আরেক খেলার সাথী সাব্বির হোসেন চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে প্রতিবেশী রহমত আলী এসে জীম খতুনকে উদ্ধার করে। পুকুরে পানির গভীরতা বেশি হওয়া তারা ডুবে যায় বলেও জানিয়ে স্থানীয়রা।সংবাদ পেয়ে কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। তবে পানির গভীরতা বেশি থাকা বিকাল পর্যন্ত তারা নিখোঁজ তাসনিমকে উদ্ধার করতে পারেনি। নিখোঁজ শিশুকে উদ্ধারের জন্য খুলনা থেকে ডুবুরি রওনা দিয়েছেন।
নিহত ফাতেমা খাতুন বেথুলী মন্ডলপাড়া আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। সে ৩ বোনের সবার ছোটো। ফাতেমা বেথুলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর নিয়মিত শিক্ষার্থী। এছাড়া নিখোঁজ তাসনিম কালীগঞ্জ উপজেলা আলাইপুর গ্রামের দিন মজুর আব্দুল বারেকের মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় তাসনিম। তাসনিম বেথুলী গ্রামের নানা দুখু মিয়ার বাড়ি বেড়াতে এসেছিল। সে আলাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী । জীবিত উদ্ধার জীম খাতুন বেথুলী গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী মোফাজেল হোসেনের মেয়ে। জীম বেথুলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ।
কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদ জানান, পুকুরে পানির গভীরতা প্রয় ২০ ফুট। যে কারণে আমরা স্থানীয়দের সহযোগীতায় চেষ্টা করেও নিখোঁজ তাসনিমকে উদ্ধার করতে পারিনি। স্থানীয় শত শত উৎসুক জনতা পুকুর পাড়ে মর্মান্তিক এই করুন দৃশ্য দেখার জন্য ভিড় করে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।