অনলাইনে আয়ের প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুবাই থেকে পরিচালিত প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতের নাম মো. আব্দুল আল মাসুম। এক ভিকটিমের কাছ থেকে ৯ লাখ ১৯ হাজাদ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর খিলগাঁও থানায় দায়েরকৃত মামলায় চট্রগ্রামকে হাটহাজারী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান,সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা প্রথমে ভিকটিমকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন ভুয়া ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির পরিচয় দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজের অফার প্রদান করে এবং বিভিন্ন উপায়ে টাকা উপার্জনের মিথ্যা কৌশল সম্পর্কে ব্রিফিং দিয়ে ভিকটিমকে তাদের সাথে কাজ করতে অনুপ্রানিত করে। ভিকটিম ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করে। প্রতারকরা টেলিগ্রাম গ্রুপে ভিকটিমকে কিছু টাস্ক দেয়, ঐগুলো সম্পন্ন করার সাথে সাথে ভিকটিম তার বিকাশ একাউন্টে ২০০/৩০০ টকা পেয়ে যায়। প্রাথমিক টাস্কের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন সাইটে সাবস্ক্রাইব করা। প্রতি সাবস্ক্রাইবে ১০০ টাকা করে ভিকটিমের বিকাশ একাউন্টে জমা হতে থাকে। ভিকটিমের পিছনে এভাবে প্রতারক চক্র ৮-১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে।
ভিকটিম বিকাশে এত সহজে কাজ করে টাকা পাওয়ায় কৌতুহলী হয়ে উঠে এবং প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিশ্বাস করতে শুরু করে। পরবর্তীতে প্রতারক চক্রের ডাবল বেনিফিট টাস্ক প্ল্যান, হোমওয়ার্ক প্ল্যান, ক্যাশব্যাক প্ল্যানের মত ভুয়া প্ল্যানে ভিকটিম কনভিন্সড হয়ে সরল বিশ্বাসে টাকা ইনভেস্ট করতে থাকে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে ভিআইপি নামক টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করে প্রথম ওভারটাইম প্রতিকার টাস্ক অর্ডার, দ্বিতীয় ওভারটাইম রান্ডমলি টাস্ক অর্ডার নামে ভুয়া টাস্ক সম্পন্ন করায় এবং ভিকটিমের নিকট হতে টাকা হাতিয়ে নেয়। ভিকটিম যখন তার লভ্যাংশসহ টাকা ক্যাশ আউট করতে চায় তখন সিস্টেমের সমস্যা, সার্ভার ডাউনের কথা বলে তালবাহানা করে এবং পরবর্তী টাস্কিংগুলো সম্পন্ন করার পরামর্শ দেয়।
প্রতারক চক্র ভিকটিমের কাছ থেকে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৭ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা রুজু হয়, যা সাইবার পুলিশ সেন্টার, সিআইডির নিকট তদন্তাধীন। এই মামলায় বুধবার মাসুমকে চট্রগ্রামকে হাটহাজারী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার নিকট থেকে ১ টি মোবাইল ফোন, আড়াই লাখ টাকা ও, ১৭ টি চেক বই জব্দ করা হয়।
আজাদ রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আসামী আরো জানায় উক্ত প্রতারনার কাজটি দুবাই থেকে পরিচালিত হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স এন্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিপিসির বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম।