দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ভূমি দুর্নীতি মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির জবাবদিহিতা আদালত।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডির কেন্দ্রীয় কারাগার আদিয়ালার ভেতরে বসানো এক অস্থায়ী এজলাসে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে কারাগারের ভেতরেই আদালত বসে।

ওই ভূমি দুর্নীতি বা আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবিকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। তার হয়েছে সাত বছরের কারাদণ্ড।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, আদালত এই দম্পতিকে জরিমানা দণ্ডও দিয়েছে। ইমরানকে ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি ও বুশরাকে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তাদের যথাক্রমে ছয় মাস ও তিন মাসের অতিরিক্ত কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এই মামলার রায়কে ঘিরে আদিয়ালা কারাগারে আশপাশে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। রায় ঘোষণার পর বুশরা বিবিকে আদালত কক্ষ থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়, তিনি জামিনে ছিলেন। ইমরান অগাস্ট, ২০২৩ থেকেই আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন।

রয়টার্স লিখেছে, আর্থিক দুর্নীতির মামলাগুলোতে ইমরানের (৭২) পাওয়া সাজার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। ইমরানের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এক আবাসন ব্যবসায়ীকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে সাবেক এই ক্রিকেট তারকা ও তার স্ত্রী জমি উপহার নিয়েছিলেন, এমন অভিযোগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভিযুক্ত হন তারা।

আদালতে ইমরান ও বুশরা নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন। ইমরানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তানের (পিটিআই) সঙ্গে দেশটির সরকারের আলোচনা চলার মধ্যে এই মামলার রায় তিনবার পেছানো হয়।

রায় ঘোষণার মূল তারিখ ছিল ২৩ ডিসেম্বর। কিন্তু শীতের ছুটির কারণে ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালত রায় ঘোষণা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতুবী করে। ৬ জানুয়ারি মামলার বিচারক ছুটিতে থাকায় সেদিনও রায় ঘোষণা হয়নি।

পরবর্তী তারিখ ছিল ১৩ জানুয়ারি। এদিন ইমরান ও বুশরা আদিয়ালা কারাগারে উপস্থিত হতে পারেননি আর এর জন্য হওয়া দেরিকে কারণ দেখিয়ে আদালত রায় ঘোষণা আবার পিছিয়ে দেয়।

পিটিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা রায়ের বিস্তারিত বিবরণের অপেক্ষায় আছি। তবে এটা লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল কাদির ট্রাস্ট মামলার কোনো শক্ত ভিত্তি নেই, তাই এ মামলা টিকবে না।”

ইমরান ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টের এক আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান। তারপর থেকে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেওয়াসহ এক ডজনের বেশি মামলার মুখোমুখি হন তিনি। বেশিরভাগ মামলায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে অথবা তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন...