বেক্সিমকো ফার্মা ও শাহিনপুকুর সিরামিকের বন্ধকি শেয়ার বিক্রি করে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই বেক্সিমকোর কর্মীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
আজ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির থেকেও বড় কেলেঙ্কারি বলে মন্তব্য করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের নামেই ১১টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে ঋণ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অস্তিত্ববিহীন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয়েছে আরও ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ। সব মিলিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে বেক্সিমকোর। উপযুক্ত জামানত ছাড়াই এসব ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, এসব ঋণের বিষয়ে তদন্ত হবে। বিশেষ করে এই টাকাগুলো কীভাবে নেওয়া হয়েছে। আমরা যে হিসেব পাচ্ছি সেই হিসেবে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ চুরির কেলেঙ্কারি থেকেও এটা বড় কেলেঙ্কারি। এই টাকাটা আমাদের টাকা, আপনাদের টাকা, জনগণের ট্যাক্সের টাকা ব্যাংকে রেখেছিল লোকজন, সেখান থেকে উধাও হয়েছে।
ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা জানান, যারা যারা এর সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড়া হবে না। বেক্সিমকোর লে-অফ করা কোম্পানিগুলো বন্ধ করা হবে। আইনানুগ পাওনাগুলো ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেক্সিমকোর লে-অফ করা কোম্পানিগুলো বন্ধের প্রক্রিয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করায় রিসিভারকে বরখাস্ত করাসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
তিনি জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এটি বাস্তবায়ন করবে। রিসিভার পরিবর্তনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সকল ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীসের ভিত্তিতে এবং কী কী ডকুমেন্টের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে সে বিষয়ে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অডিট করে বিভাগীয় এবং আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আগামী রোববার সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, অর্থ বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সভা করে বেক্সিমকো ফার্মা এবং সাইনপুকুর সিরামিক্সের বন্ধককৃত শেয়ার বিক্রির ব্যবস্থা করবে। অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। অর্থ বিভাগ থেকে আমরা যে টাকাটা পাব শ্রমিকদের গ্রাচুয়িটি সার্ভিস বেনিফিটসহ আইনে যা যা আছে তা পরিশোধ করা হবে। বেক্সিমকোর দু’একটি প্রতিষ্ঠান চালু আছে সেগুলো পরে বিক্রি করা যায় কিনা অন্যরা তা দেখবে।