মোঃ বাবুল হোসেন,পাঁচবিবি (জয়পুরহাট): জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পুকুর সংস্কারের নামে চলছে মাটি বিক্রির মহৎসব। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা, রাতে-দিনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, জেল-জরিমানা, মাটি পরিবহনের ট্রাক্টর জব্দসহ নানামুখী পদক্ষেপেও থামছেনা মাটি খেকোদের দৌরাত্ম্য। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা কোনো মৌসুমেই থেমে নেই এ উপজেলার বিভিন্ন নদীরপাড়, খাল, পুকুরসহ ফসলি জমির উর্বর মাটি লুট করা। এতেই ক্ষান্ত নন, গভীর করে মাটি ওঠানোর পর তারা নীচ থেকে বালুও উত্তোলন করছেন কোথাও কোথাও থেকে। এসব মাটি পরিবহনের কারনে ট্রাক্টর থেকে মাটি পাকা সড়কে পড়ে গিয়ে রাতের কুয়াশায় পিচ্ছিল হচ্ছে সড়ক।
একারণে দূর্ঘটনার কবলে পড়ছেন মোটরসাইকের আরোহীসহ পথচারীরা। আবার গ্রামীণ এই সড়ক গুলোও নষ্ট হচ্ছে।
জানাগেছে, আমন ধান কাটামাড়াইয়ের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৌশলে শুরু হয়েছে পুকুর সংস্কার, ফসলি জমি উচু-নিচু সমান, ফসলি জমিতে পুকুর খনন, নদীর পাড় কাটা, খালের মাটিকাটাসহ মাটির বিক্রির মহোৎসব চলছে। এসব মাটি স্থানীয়দের কাছে বিক্রির পাশাপাশি বেশিরভাগ মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। এদিকে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। তবুও দিনে রাতে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে মাটি কাটার ব্যবসা চলছে। অবশ্য স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এলাকায় বেশকিছু ব্যাক্তি ভেকু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে যেন কোনোমন্ত্রই খাটছেনা।
সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, পাঁচবিবি উপজেলার পাগলা বাজার থেকে উত্তর দিকে সামান্য দুরে বাউলীয়া মৌজায় ফসলের মাঠে প্রায় ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে ভেকু দিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। জমির মালিকদের দাবি, ওই জমিতে বহুবছর আগে থেকেই পুরনো একটি পুকর ছিল। বর্তমানে তারা পুকুরটি সংস্কার করছেন বলে তাদের দাবি।
এবিষয়ে পুকুরের ওয়ারিশ জাতাইর গ্রামের মো. আশরাফ আলী বলেন, এটি আমাদের শরীকের বেশ পুরুনো একটি পুকুর। এটি সংস্কার করতে আবার কিসের অনুমোদন লাগবে। মাটি বিক্রির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মাটি বিক্রির বিষয়টি ভেকুর মালিক জানে। এছাড়াও উপজেলার চাঁনপাড়া, রায়গ্রাম, আংড়া, পাড়ইলসহ বেশ এলাকায় এ দৃশ্য চোখে পড়েছে।
পাঁচবিবি উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, অবৈধভাবে কোথাও মাটি কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তাছাড়া ইতিমধ্যেই বেশকিছু ভেকু ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।