
রাজন্য রুহানি,জামালপুর: জামালপুরে রাজিব বাস বন্ধ ও বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ঘিরে শিক্ষার্থী-শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-ধাওয়ির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হয়েছেন একজন বাস শ্রমিক। প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে দুইপক্ষের থেমে থেমে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটলেও পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করায় বাস শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে জামালপুর জেলা সদর থেকে সারাদেশে বাস ও মিনিবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছে জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২ টায় শহরের বাইপাস মোড় এলাকায় রাজিব বাস বন্ধ ও সিন্ডিকেট ভেঙে জেলায় বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে এক মানববন্ধন করে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুকুল ও আঁখি, সদস্য সচিব আবিদ সৌরভ, যুগ্ম সদস্য সচিব নাফিজা আলম দিয়া প্রমুখ।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে জেলার প্রধান সড়ক জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও জামালপুর থেকে ৪ উপজেলার মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সড়কে আটকা পড়ে হাজার হাজার যানবাহন। এ মহাসড়কে অবস্থান নেয় শ্রমিক ও শিক্ষার্থীরা। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় তারা। শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। অপরদিকে এ সমস্ত দাবিদাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আলোচনার প্রস্তাব দেয় বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির নেতারা। তবে এখনো দুইপক্ষের মধ্যে কোন সমঝোতা হয়নি!
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আবিদ সৌরভ বলেন, জামালপুরে রাজিব বাস সার্ভিস খুবই বাজে। অতিরিক্ত টাকা নেয়। যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ড্রাইভার-হেল্পাররা। তাদের বেপরোয়া গতির কারণে প্রতিদিনই সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে অনেকেই। তাই রাজিব বাস বন্ধ এবং জেলার বাস সিন্ডিকেট ভেঙে বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
তিনি আরও বলেন, মানববন্ধন চলাকালে বাস শ্রমিকরা আমাদের উপর চড়াও হয়। আমরা শান্তি পূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। সব বাস চললেও রাজিব বাস চলতে দেওয়া হবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে আরও বড় আন্দোলনে যাবো আমরা।
জামালপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শুভ বলেন, উদ্ভূত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের আলোচনার জন্য ডাকা হলে উল্টো মারমুখি অবস্থানে যায় তারা। এতে আহত হয়েছেন আমাদের এক শ্রমিক। শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে জামালপুর হতে সারা জেলার সকল বাস-মিনিবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আবু ফয়সাল মো. আতিক বলেন, বেলা তিনটার দিকে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়াও বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে।