স্বাধীনতার সুফলটা যেন জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

পদক
প্রধানমন্ত্রীর সাথে স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত

পিবিএ,ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘স্বাধীনতার সুফলটা যেন বাংলার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারে এবং আর্থ সামাজিকভাবে আমরা উন্নত হতে পারি। উন্নত জাতি হিসাবে বিশ্বে যেন একটা মর্যাদা ফিরে পেতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করেছি।’ ‘যার শুভফল দেশবাসী পেয়েছে।

সোমবার (২৫মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, গত এক দশকে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্ববাসী একসময় বাংলাদেশের কথা শুনলেই বলত, দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ মনে করে অবহেলার চোখে দেখত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি আমাদের খুব কষ্ট লাগত। এই স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ যে সংগ্রাম জাতির পিতা করেছেন বা আমরাও ভুক্তভোগী। আমাদেরও চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে জীবন গেছে। আমরাও রাজপথে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। যারা মুক্তিযুদ্ধের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে দেশকে স্বাধীন করেছে, নিজের জীবন অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছে, খুব স্বাভাবিকভাবে সেই দেশটাকে নিয়ে কেউ যদি সম্মানের সঙ্গে সেই দেশটাকে না দেখে, সেই দেশটাকে যদি অসম্মানের সঙ্গে দেখে সেটা স্বাভাবিকভাবে এটা আমাদের জন্য কষ্টের কারণ ছিল।’

‘সেই কারণেই আমরা যখনি সরকারে এসেছি। আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি, কত দ্রুত দেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নতি করা যায়, উন্নত দেশ হিসাবে বিশ্বে একটা মর্যাদা অর্জন করা যায়। আজকের বাংলাদেশ অন্তত আমাদের এক দশকের প্রচেষ্টার ফলে এখন এই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ অর্জন করতে যাচ্ছি। আমাদের মাথাপিছু আয় যেখানে এক হাজার ৭১১ মার্কিন ডলার অর্জন করেছিলাম, সেটা আমরা ১৯০৯ মার্কিন ডলার অর্জন করতে যাচ্ছি’ বলেন শেখ হাসিনা।

‘আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে, উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে বাংলাদেশের কথা শুনলে মানুষ সম্মানের চোখে দেখে, এইটুকুই আমার তৃপ্তি যে অন্ততপক্ষে বাংলাদেশটাকে এ মর্যাদা পর্যন্ত আমরা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি’

দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন বিশ্বাস রেখেছেন। আমাদের ভোট দিয়ে আবার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন এবং সামনে আরও কিছুদিন আমরা সময় পাচ্ছি, এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।’

আমাদের চলার পথও খুব সহজ ছিল না দাবি করে এ বিষয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরে বৈশ্বিক ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরেন টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে যখন দুর্নীতির অভিযোগ আমার ওপর আনা হল বা আমার পরিবারের ওপর আনা হলো, অন্তত এইটুকু মানসিক শক্তি আমাদের ছিল। এটাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। দুর্নীতি কোথায় হয়েছে তা প্রমাণ করতে হবে। ওয়াল্ড ব্যাংক সেটা প্রমাণ করতে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছিল।’

স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জানি, এরকম আরও অনেক জন রয়ে গেছেন। সকলকে হয়ত আমরা দিতে পারছি না। আমি আহ্বান করব, আজকের বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, এর পিছনে যাদের অবদান রয়েছে, এমনকি গ্রাম বাংলায় ছড়িয়ে আছে অনেকে। যারা তাদের ক্ষুদ্র বা অল্প সম্পদ দিয়েও একটু সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাদেরকে সহযোগিতা করে। এই ধরনের যারা অবদান রাখে দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে, মানুষের জন্য; আমি মনে করি তাদেরকেও আমাদের খুঁজে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। তারা যে মানবকল্যাণে অবদান রেখে যাচ্ছেন, সেজন্য তারা পুরস্কারপ্রাপ্তির যোগ্য।’

পিবিএ/এফএস

 

আরও পড়ুন...