
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে দেওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের সিদ্ধান্ত রহিত করেছে সরকার। অর্থাৎ তাঁকে দেওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার বহাল করা হয়েছে। ২০০৩ সালে তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এ বছর সাত বিশিষ্টজনকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে সরকার।
বুধবার (১১ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
২০২৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত বিশিষ্টজনদের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম, সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (কবি আল মাহমুদ), সংস্কৃতিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম নকশাকার নভেরা আহমেদ, সমাজসেবায় ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (পপসম্রাট), শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর (বদরুদ্দীন উমর) এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
২০১৯ সালের অক্টোবরে বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে নিহত হন আবরার ফাহাদ। এই সাতজনের মধ্যে বদরুদ্দীন উমর ছাড়া বাকি ছয়জনই মরণোত্তর এই পুরস্কার পাচ্ছেন।
অবশ্য, কয়েক দিন আগে সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণার পরপরই বদরুদ্দীন উমর বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, এই পুরস্কার গ্রহণ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এই প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে আমি এটা জানিয়ে দিচ্ছি।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে (মরণোত্তর) ২০০৩ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের যে রায়ের পটভূমিতে ২০১৬ সালে সরকার পুরস্কার বাতিল করে সেই রায়ে তাঁকে দেওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের কোনো নির্দেশনা নেই। এ জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসাধারণ অবদান বিবেচনায় তাঁর স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের সিদ্ধান্ত রহিত করা হয়েছে।
সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা, স্বর্ণপদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।