তথ্য দিয়ে হাইওয়ে পুলিশকে সহায়তা করে মিলল সম্মাননা

মোবাইলে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক। অতঃপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি। স্বামী-সন্তান রেখে সেই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে বেরিয়ে যান নারী। গন্তব্য পাবনা থেকে যাবেন ঢাকায়। সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছেন পরকীয়া প্রেমিক। পথে ওই নারীর গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় বিষয়টি এলেঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশকে জানান একই বাসের আরেকজন যাত্রী।

গত ১২ মার্চ সকালে ঘটনা এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ। পরে বাসটি শনাক্ত করে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলেন হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা।

তারা জানতে পারেন, যার সঙ্গে ওই নারীর পরকীয়া প্রেম সে একজন ভবঘুরে। নিজে কিছু করেন না। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে ঘরছাড়া ওই নারীকে বাড়িতে পাঠানো হয়। আর যিনি ঘটনাটি পুলিশকে জানান, সেই নারী যাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার হোসেন মিঞা তথ্য প্রদানকারী নারী সাইফুন্নেসাকে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে তিনি এই সম্মাননা দেন।

একইদিন গণমাধ্যমে পাঠানো সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনার দিন সি-লাইন পরিবহনের একটি বাস পাবনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসে থাকা একজন নারী যাত্রী অপর আরেক যাত্রীর মোবাইলে কথোপকথন থেকে আঁচ করেন- মেয়েটি কোনো ব্যক্তির প্রতারণায় ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে। আর সে বাসা থেকে পালিয়েছে। ভুক্তভোগী নারীকে সহায়তার জন্য কৌশলে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশকে জানান। পুলিশের একটি দল ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাসের অবস্থান শনাক্ত করে। ওইদিন দুপুরে টাঙ্গাইল সদর থানার আশেকপুর বাইপাস এলাকায় বাসটির গতিরোধ করা হয়। ভুক্তভোগী মেয়েটির গন্তব্য ও তার পরিবার সম্পর্কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তার তথ্য সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে এলেঙ্গা হাইওয়ে থানায় আনা হয়।

পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, কুমিল্লার একটি ছেলের সঙ্গে তার মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়েছে। তার প্রতিশ্রুতিতেই নিজের স্বামী ও এক ছেলেকে রেখে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন। পুলিশ ছেলেটির মোবাইল নম্বর নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এসময় কথোপকথনে জানা যায়, যে ছেলের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ওই নারী ঘর ছেড়েছেন সে মূলত ভবঘরে প্রকৃতির। নিজের কোনো পরিবার নেই। একই তথ্য দেয় স্থানীয় থানা পুলিশ। পরে ভুক্তভোগী মেয়েটির পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিবার মেয়ে নিখোঁজ হয়ে জানিয়ে থানায় একটি হারানো জিডিও করে। পরে পাবনা জেলা পুলিশের একটি দল ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এসময় বাসে থাকা তথ্য দিয়ে সহায়তাকারী ওই নারীও ঢাকায় না এসে পুরো সময় ভুক্তভোগীর সঙ্গে থাকেন।

বিষয়টি জানতে পেরে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান দেলোয়ার হোসেন মিঞা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তাকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। আজ তিনি সাক্ষাৎ করেন এবং ভুক্তভোগী নারীকে কৃতজ্ঞতা জানান।

জানা গেছে, তথ্য প্রদানকারী ওই নারী যাত্রীর নাম সাইফুন্নেসা। তিনি ঢাকার মিরপুরের থাকেন। তারও গ্রামের বাড়ি পাবনায়। তিনি ঘটনার দিন পাবনা থেকে ঢাকা আসছিলেন।

আরও পড়ুন...