
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ধর্মীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান ও দিবসে নিরাপত্তা প্রদান এবং বিভিন্ন সেবামূলক কাজের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের মনের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ পূর্বক কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। সার্বিকভাবে সব ধরণের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও র্যাব ফোর্সেস কর্তৃক নিম্ন বর্ণিত বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছেঃ
ক। র্যাব সারাদেশ ব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যাটালিয়নসমূহ নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন রেখেছে।
খ। সারা দেশব্যাপী থাকবে র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল পেট্রল, ভেহিক্যাল স্ক্যানার, অবজার্ভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট এবং সিসিটিভি মনিটরিং।
গ। ব্যাটালিয়নসমূহ নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে সমন¦য় করছে। র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।
ঘ। রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে র্যাবের ৯৯ টি টহল সহ দেশব্যাপি সর্বমোট ৩৫১ টি টহল মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নাশকতাসহ যেকোন ধরণের উদ্ভুত পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
ঙ। ভার্চুয়াল জগতে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে যেকোন ধরণের গুজব/উস্কানিমূলক তথ্য/মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে র্যাব সাইবার মনিটরিং টীম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে।
চ। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ঘরমুখী মানুষের নিরাপদে বাড়ী ফেরা নিশ্চিত করার জন্য সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ঃ
ইতোমধ্যে র্যাব ফোর্সেস ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে। ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসায় সাধারণ জনগণ সহজেই ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পেরেছেন এবং নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দে ঈদে বাড়িতে গমন করছে।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দেশব্যাপী ঘরমুখী মানুষকে নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি র্যাবের সেবা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সকল ব্যাটালিয়নসমূহের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট এবং গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম স্থানসমূহে থাকবে র্যাব ফোর্সেস এর বিশেষ নজরদারী। সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি, অজ্ঞান/মলম পার্টি, চাঁদাবাজি এবং ছিনতাই রোধকল্পে নজরদারি ও প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই বাস, পিকআপ, লেগুনা ইত্যাদি যানসমূহের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কিনা তা যাচাই করা এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন টার্মিনাল ও আশপাশের স্থানসমূহে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে।
সড়ক ও নৌ পথে বাস/লঞ্চ চালকেরা যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাস/লঞ্চ চালনা না করে সেজন্য বাস ও লঞ্চ মালিক ও চালকদের সতর্কীকরণ ও সচেতন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছ। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে (জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও দিনাজপুর বড় ঈদগাহ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুপূর্ণ ঈদগাহ সমূহে নিরাপত্তা সুইপিং করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সিসিটিভি কাভারেজ থাকবে।
জ। গুরুত্বপূর্ণ শপিং মল, বিপণী বিতান ও জন সমাগমপূর্ণ এলাকায় স্ট্যাটিক টহল ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে; যাতে করে সাধারণ জনগণ উৎসব মুখর পরিবেশে এবং নিরাপদে কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারে।
ঝ। রাজধানীসহ সারাদেশে ঈদের ছুটিতে যাওয়া মানুষের বাসস্থান, কর্মস্থল, শপিংমলসহ অন্যান্য স্থানে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে র্যাবের নজরদারী ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ঞ। ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর) জেলাসমূহসহ সারাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী সমূহের শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধের সময়ে যাতে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি না হয় সেই বিষয়ে সহযোগিতা ও নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
ট। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদয্াপন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে আগত মহিলাদের উত্যক্ত/ইভটিজিং/যৌন হয়রানি রোধকল্পে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ কোন ধরণের হেনস্থার শিকার হলে অবশ্যই কর্তব্যরত র্যাবকে জানাবেন। র্যাব ফোর্সেস কঠোর হস্তে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ঠ। র্যাব সদর দপ্তর সার্বিক কার্যক্রম সার্বক্ষণিকভাবে মনিটর করছে।
পূর্বের বছরগুলোর ন্যায় এ বছরও অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে সারা দেশব্যাপী ঈদের আনন্দে শামিল হবে। এ উপলক্ষে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।