ইয়াবা ব্যবসায় রোহিঙ্গা শিবিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি

পিবিএ,কক্সবাজার: বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল মতলবকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে এ ঘটনা ঘটে। ইয়াবা ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন শিবিরের বাসিন্দারা।

টেকনাফ নিবন্ধিত নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, রোববার রাতে লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান মতলবকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের এ-ব্লকে রাতে শিবিরের প্রহরীদের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে এক রোহিঙ্গা পরিচালিত পানের দোকানে বসেছিলেন আবদুল মতলব। হঠাৎ একদল অস্ত্রধারী এসে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে । এসময় পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে অস্ত্রধারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে মতলবকে উদ্ধার করে রোহিঙ্গা শিবিরের আইএমও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় গোটা রোহিঙ্গা শিবিরের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আবদুল মতলব মিয়ানমারের রাখাইন এলাকায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মিয়ানমার বাহিনীর সন্ত্রাসের মুখে ২০০৩ সালে পালিয়ে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকেই ক্যাম্পে অবস্থান করছেন তিনি।

আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গারা জানান, স্থানীয় রঙ্গিখালি ও আলীখালী এলাকার কিছু অস্ত্রধারী ইয়াবা ব্যববসায়ী রোহিঙ্গা শিবিরে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। আবদুল মতলব চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি রোহিঙ্গা শিবিরে ইয়াবা বিক্রেতাদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাছাড়া গত কয়েকদিন আগে চেয়ারম্যান মতলবের সহযোগিতায় ৬০ পিস ইয়াবাসহ এক ইয়াবা বিক্রেতাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

মাত্র কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, টেকনাফে উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। আর এর মধ্যেই লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে এ সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটল।

টেকনাফ আশ্রয় শিবিরকে কেন্দ্র করে একটি সশস্ত্র গ্রুপ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও সেটা জানে। এদের একজন সম্প্রতি র‍্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। তারই প্রতিশোধ নিতে সন্ত্রাসীরা গত মাসে আশ্রয় শিবির থেকে একজন রোহিঙ্গা গ্রাম ডাক্তারকে ধরে নিয়ে পাহাড়ের আড়ালে গুলি করে হত্যা করে।

মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি শিবিরে অবস্থান করছে। স্থানীয় জনসংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী রোহিঙ্গা কক্সবাজরের উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় আশ্রয় নেবার কারণে এ এলাকার আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। আর এ নিয়ে প্রশাসনও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...