৪ বছর ধরে নিখোঁজ শিশু সোহাগী, অপেক্ষায় বাবা-মা

খন্দকার শাহিন, পিবিএ,নরসিংদী: “শুনছি মানুষ মইরা গেলেও নাকি সাত হাত মাটির তল থাইকা হাঁড় মাংশ উঠাইয়া আনতে পারে পুলিশ। কিন্তু ৪ বছরের উপরে হইয়া গেলো, আজ পর্যন্ত আমার জীবিত মাইয়াডার কোন খোঁজ দিতে পারলো না পুলিশ প্রশাসন। ‘আমরা গরীব বইলা আমার মেয়ের সন্ধানে মাঠে নামছে না কেউ’। যদি টাকা পয়সা থাকতো ঠিকই খোঁজ নিত। জানিনা আমার সোহাগী কেমন আছে, বাঁইচা আছে নাকি মরে গেছে।

হারানো সন্তানের জন্য পিবিএ’র সাংবাদিকের কাছে এভাবেই আকুতি জানান চার বছর আগে মাধবদী থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শিশু কণ্যা সোহাগীর মা। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা একটা কিছু করেন, আপনারাই পারবেন আমার আদরের ধন সোহাগীকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে।”

সরেজমিনে, সোহাগীদের বাড়িতে গেলে ছবি দেখিয়ে শিশুটির মা হালিমা ও বাবা আজিজুল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এসব আকুতি জানান।
সোহাগীর বাবা পিবিএকে বলেন, অপহরণকারীদেরকে চিহ্নিত করে দেয়া সত্ত্বেও বছরের পর বছর গেলেও তাদের মেয়ের কোন খোঁজ বা অপহরণকারীদের কাউকেই আটক করতে পারছেনা পুলিশ। মেয়ের খোঁজে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে সোহাগীর পরিবার। তারা মেয়েকে ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে ২০১৪ সালের ৪ অক্টোবর নরসিংদীর মাধবদী পৌর শহরের মনোহরপুর মহল্লার প্রতিবেশীর ভাড়াটিয়া লাল চান ও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম রিকশা চালক আজিজুলের চার বছরের মেয়ে শ্রাবন্তী আক্তার সোহাগীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার চার দিন পর সোহাগীর বাবা আজিজুল নরসিংদী মডেল থানায় একটি মামলা করেন যাহার নং- ১৫ তাং ০৮/১০/১৪ ইং । এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন তৎকালীন মাধবদী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল কালাম। মামলার শুরুর দিকে তিনি কিছুটা তৎপর ছিলেন। ঘটনার তিন মাস পর নরসিংদী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সহযোগিতায় চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আজিজুলের ব্যবহৃত মোবাইলসহ একজনকে গ্রেফতার করেছিল। পরে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কে। এরপর থেকে আর মামলাটির কোন অগ্রগতি হয়নি।

নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রূপম সরকার পিবিএ’কে জানান, প্রায় বছর খানিক আগে মামালাটির দায়িত্বে ছিলেন তিনি, পরে মামলাটি নরসিংদী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) চলে যায়, তারা একটি শিশুকে উদ্ধারও করেছিল কিন্তু সেটি সোহাগী নয় বলে তার বাবা-মা জানান।

পিবিএ/হক

 

 

 

আরও পড়ুন...