পিবিএ ডেস্ক: আজ শপথ নিতে যাচ্ছেন গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান।গতকাল সোমবার তিনি জানিয়েছিলেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই তিনি শপথ নিচ্ছেন।কিন্তু রাতেই দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানালেন, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় কমিটির, কিন্তু কমিটি এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।দলের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, দলের প্যাডে এবং দলের পক্ষে দলীয় সিদ্ধান্ত জানানোর এখতিয়ার রয়েছে শুধু মাত্র দলীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের।মোকাব্বির খানের এ ধরনের কোন এখতিয়ার নেই।তাছাড়া তিনি দলীয় প্যাড চুরি করে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। তারা মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে বরং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নীতিহীনতার অভিযোগ করেছেন।
শপথের বিষয়ে সোমবার মোকাব্বির বলেন, ‘আমি গণফোরামের সিদ্ধান্তেই শপথ নিচ্ছি। আমার পার্টি থেকে বলা হয়েছে, শপথ নিতে। আমি তো বিএনপির প্রার্থী না। তাই তাদের বিষয়ে কিছু জানি না। আমি সোমবার বিকেলে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছি। তবে সময় কখন সেটা জানি না।’
তবে মোকাব্বিরের এ দাবির বিষয়ে জানতে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে শপথ না নেওয়ার। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত এটা। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেকটি মিটিং আছে। তার আগেই উনি এটা কেন করলেন, বুঝলাম না। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেই তিনি শপথ নিচ্ছেন। উনি যা বলছেন তা সঠিক না।’
শপথ নিতে গণফোরামের প্যাডে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে সুব্রত চৌধুরী বলেন, মোকাব্বির খান গণফোরামের প্যাড ‘চুরি’ করে সেই কাগজে স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। মোকাব্বিরের বিষয়ে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরে বৈঠক করে তা জানানো হবে।
দলের অন্যতম মুখপাত্র প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম পথিক বলেন, না মোকাব্বির খানের এ দাবি সঠিক নয়। শপথের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো সভায় তার শপথের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ায় মোকাব্বির খানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে পথিক বলেন, অবশ্যই। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরপর রফিকুল ইসলাম পথিক আরও বলেন, এটাতো আরও খারাপ কাজ করেছে। সে যখন নমিনেশন নিয়েছে তখনতো আমাদের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠি নিয়েই মনোনয়ন দাখিল করেছে। ওখানে যদি চিঠি যায় সে চিঠিতো অবশ্যই আমাদের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে যেতে হবে। সে প্যাড কোথায় পেয়েছে সেটাই আমরা ভেবে পাচ্ছি না। সম্ভবত অফিস থেকে বা কোথাও থেকে আমাদের প্যাড সে ‘চুরি’ করেছে। নিজের অভিলাষ, নিজের খায়েশ মেটাতে সে নিজ থেকেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর মধ্যে দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের দুজন নেতা সংসদে যাচ্ছেন। এর আগে গত ৭ মার্চ শপথ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ ৬ মার্চ সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত পাল্টান গণফোরামের এই সদস্য।
দলীয় চাপের মুখে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তবে ওই দিন অর্থাৎ ৭ মার্চ শপথ নেন গণফোরামের আরেক সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোকাব্বির খান। তিনি সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।
পিবিএ/এএইচ