পিবিএ,ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও জিঘাংসার শিকার। তাকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দেশবাসী বেগম জিয়ার পক্ষে, গণজোয়ার ঠেকানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র নির্বাসন’ দিয়ে সরকার দেশে ‘হরণতন্ত্র’ চালু করেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১টায় নয়াপল্টনে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘আপনি(প্রধানমন্ত্রী) এক এক করে গণতন্ত্র হরণ করেছেন, স্বাধীনতাকে ধবংস করেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছেন, মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছেন। আপনি গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশে হরণতন্ত্র চালু করেছেন। তারপরও কি টিকে থাকা যাবে? প্রধানমন্ত্রী গণজোয়ারের সম্ভাবনা আপনি হয়ত টের পাচ্ছেন না। কিন্তু অন্যায়-অবিচারের লৌহ-শৃঙ্খল ভেঙে যে গণজোয়ার তৈরি হবে, সেই গণজোয়ার আপনি কোনোভাবে ঠেকাতে পারবেন না।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘‘ অন্যায়-অত্যাচারে বিরুদ্ধে সত্যের জন্যে এই ইট-পাথর-কংক্রিটের রাজপথের মিছিল চলবে, আন্দোলন চলবে, যাত্রাবাড়ি থেকে গাবতলী আর টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া মিছিল থামবে না। যতক্ষন পর্যন্ত না গণতন্ত্রের মুক্তি হয়, যতক্ষন পর্যন্ত না গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হন।”
তিনি বলেন, ‘‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছেন। তাতে আপনার সাময়িক লাভ। কিন্তু আপনার মনে কী শান্তি আছে? অবৈধভাবে, অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকলে কখনো মনে কখনোই শান্তি থাকে না। সব সময়ে পতনের আশংকায় আপনার দুশ্চিন্তা সব সময় থাকবে।”
ইতিহাসের বর্ণনা দিয়ে রিজভী বলেন, নেসল মেন্ডেলাকে ২৭ বছর কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিলো। সে দেশের শ্বেতাঙ্গ সরকার আটকিয়ে রেখেছিলো। তাতে জনগন কার দিকে ছিলো? বিশ্বজনমত কার দিকে ছিলো ? শ্বেতাঙ্গরা সেদিন বাঁচতে পারেনি। গোটা বিশ্বে নন্দিত-জননন্দিত নেতা নেলস মেন্ডেলা। আপনি বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছেন, বন্দি রেখেছেন। তিনি আর বাংলাদেশের নেতা নন, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার মানুষের কন্ঠে ধবনিত হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অন্যায়-প্রতিহিংসা-জিঘাংসার শিকার। তার চিকিৎসাও করতে দিচ্ছেন না।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘ দেশনেত্রী সুস্থ মানুষ কারাগারে হেঁটে গেলেন। এখন তিনি হাঁটতে পারছেন না, হুইল চেয়ার ব্যবহার করছেন। তিনি মাথা সোজা করতে পারছেন না। জেলখানার একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠের মধ্যে রেখেছেন তাকে। সেখান থেকে টেনে হেঁচড়ে করে ৭/২ দিন পর পর আদালতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেনো? এই টানা-হেঁচড়া করে কি দেশনেত্রীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন? ”
সারাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনে রোধে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপির এই নেতা।
সমাবেশ শেষে কার্যালয়ের সামনে থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরার মোড় পর্যন্ত মিছিল বের করে মহিলা দল। এ সময়ে নেতা-কর্মীদের হাতে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সঞ্চালনায় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, পেয়ারা মোস্তফা, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, সাবিনা ইয়াসমীন, মাসুদা খানম লতা, নিলুফার ইয়াসমীন নিলু, সেলিনা হাফিজ, মর্জিনা আফসারী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
পিবিএ/এএইচ