কুসিকের ৯টি নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ, অগ্নিঝুঁকিতে বেশিরভাগ ভবন

পিবিএ,কুমিল্লা: নকশা বহির্ভুত ও নকশাবিহীন অবৈধ ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ৯টি নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর ঠাকুরপাড়া, নজরুল এ্যভিনিউ, দক্ষিণ চর্থা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নির্মাণাধীন ৯টি ভবন সিলগালা ও নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। অপর দিকে অগ্নি ঝুঁকিতে কুমিল্লা মহানগর ও সংলগ্ন এলাকার অন্তত আশি ভাগ ভবন। এরমধ্যে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ের সাত তলা থেকে শুরু করে সুউচ্চ ভবনগুলো। তবে ৬/৭ তলার আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের বেশির ভাগেই নেই আগুন নির্বাপনের কোন সুবিধা।

এদিকে নকশা বহির্ভুত ও নকশাবিহীন অবৈধ ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা সময় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম বড়ুয়া। এসময় ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জনি রায় উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়,নকশা বহির্ভুত ও নকশাবিহীন অবৈধ ভবন নির্মাণের অভিযুক্ত ভবন মালিকদের নোটিশ প্রদান করা হয় এবং রোববারের মধ্যে সিটি কর্পোরেশনে জবাব দিয়ে আগামী ১৫দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেয়া হয়। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু জানান, অভিযোগ আছে নগরীর ৯০শতাংশ ভবনে নকশা বহির্ভূত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আজ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। বাকিগুলোর বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কুমিল্লা ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন জাহেদ(শাহিন) বলেন,কুমিল্লা নগরীসহ শহরতলি এলাকায় নীতিমালা লঙ্ঘন করে দেদারসে নির্মিত হচ্ছে শত শত বহুতল ভবন। বিল্ডিং কোড ও সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করেই উপরের দিকে উঠছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। ছয় তলার উপরের ভবন মূলত হাইরাইজ বা সুউচ্চ ভবন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। নগরীতে এমন সুউচ্চ ভবন রয়েছে তিন শতাধিক। অধিকাংশ ভবনে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এমনসব বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে ভবনের পাশে নেই পর্যাপ্ত রাস্তা। ফলে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া আগুন লাগলে জরুরি অবস্থায় বের হওয়ার সিঁড়িও নেই ভবনগুলোতে।

এদিকে বাণিজ্যিক ভবনের মধ্যে কয়েকটিতে আগুন নেভানো বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা থাকলেও বাকিগুলো অগ্নি ঝুঁকি নিয়েই দাঁড়িয়ে রয়েছে। কেবল এসব ভবনেরই নয়, আগুন নির্বাপণের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুমিল্লা কার্যালয়ের।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না রাখাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে কুসিক কর্তৃপক্ষ বেশকিছু ভবনকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। ভবনের প্ল্যান অনুমোদনের সময় আগুন নির্বাপণের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়ার পরও যাতে কেই ফাঁক ফোকর দিয়ে ভবন তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর ব্যাপারে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু নগর ভবনের সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

পিবিএ/এমএইচ/হক

আরও পড়ুন...