পিবিএ, জাবি : দিন যত সামনে এগোচ্ছে তত বাঙালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ এগিয়ে আসছে। বাঙালীর নিজস্ব জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অন্যতম উৎসব বৈশাখ বরণকে ঘিরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই চলছে উৎসবমুখর পরিবেশে ব্যাপক আয়োজন। কেউ বানাচ্ছেন বিভিন্ন প্রাণীর মুখোশ, কেউ কার্টুন, কেউবা বাঁশের ঢোল-তবলা। আবার কেউ তাতে আলতো করে দিচ্ছে রংয়ের ছোঁয়া। একটাই লক্ষ্য বর্ণিল আয়োজনে প্রাণের বৈশাখ উদযাপন।
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনের মূল আয়োজনে প্রতি বছরই থাকে চারুকলা অনুষদ ও বাংলা বিভাগ অন্যবারের তুলনায় এবারের আয়োজনটা বড় পরিসরে করছে। বিভাগের ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬ ,৪৭, এ ৫টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মিলে এবারের আয়োজন করছে।
খােঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষবরণের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। প্রথমদিনে বৈশাখ বরণেই থাকছে মঙ্গল কামনায় শোভাযাত্রার আয়োজন। এবছর মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকবে লোকজ সঙ্গীতের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র যেমন- ঢোল, তবলা, একতারা, ডুগডুগি। হারাতে বসা লোকজ ঐতিহ্য সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার লক্ষেই এই আয়োজন ।
এছাড়াও পেঁচা ও বাঘসহ নানা ধরণের মুখোশ থাকছে। সঙ্গে গ্রাম-বাঙ্গলার মানুষের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে কৃষক, কামার, কুমার, মোড়ল, বর-বউ, জেলে রূপে সাজ শোভাযাত্রাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করবে।
আয়োজনের কাজে ব্যস্ত চারুকলার শিক্ষার্থী সেলিম মিয়া বলেন, আমাদের কাজ প্রায় শেষের দিকে এবারের আয়োজনে আমরা চারটি মোটিভ তৈরি করেছি আয়োজনে মূল আকর্ষণে থাকছে বিশাল আকারের সাইকেল- যা তুলে ধরবে দেশের সড়ক দূর্ঘটনাকে।যত বেশি গতি তত বেশি দূর্ঘটনা এছাড়া মাছ ,টেপা পুতুল, পেচা, বাঘ থাকছে এবারের মূল আকর্ষণে হারাতে বসা লোকজ ঐতিহ্য সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যেই আমাদের আয়োজন ।
ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখা যায়, শুধু চারুকলা নয়, অধিকাংশ বিভাগে চলছে প্রস্তুতি। নানা আয়োজনে তারা বরণ করে নিবেন বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব বৈশাখকে। এরই মধ্যে বিভিন্ন বিভাগ ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে। চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। স্ব-স্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ব্যানার, কার্টুন-ফেস্টুন তৈরি ও আল্পনা আঁকায়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, আইন বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, নৃ-বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিভাগ শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছে।
এদিকে মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলা চলাকালে সঙ্গীত, নৃত্য ও নাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে।
সবমিলয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ বরণ করে নিতে এখন প্রস্তুত প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী। বাঙালি জীবনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, পহেলা বৈশাখে মেতে উঠতে মুখিয়ে আছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়।শেষ মুর্হূতে রংয়ের আঁচড় দিতে এখন ব্যস্ত তারা।