হালদা নদীতে ডিম ছাড়তে বৃষ্টির অপেক্ষায় মা মাছ

হালদা নদীতে ডিম ছাড়তে বৃষ্টির অপেক্ষায় মা মাছ
হালদা নদী

খোরশেদ আলম শিমুল,পিবিএ,হাটহাজারী(চট্টগ্রাম): দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। এ নদীতে চৈত্র-বৈশাখ মাসে রুই, কাতলা মৃগেল ও কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে। চৈত্র মাসে হালদা নদীতে ছাড়া ডিম খুবই উৎকৃষ্ট। এ ডিমের পোনা দ্রুত বর্ধনশীল। বাংলা বছরের শেষ মাস থেকে বিশেষ করে ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে সাংগু, মাতামুহুরী,কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল থেকে মা মাছ হালদা নদীতে চলে আসে। প্রতি বছরের মতো এবারও মা মাছগুলো হালদা নদীতে এসেছে।

মাছের পেট ভর্তি ডিম মা মাছের আনাগোনা বেড়েছে। ডিম দেওয়ার পরিবেশ ঠিকতাকলে থাকলে আগামী জো’তে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়বে হালদা নদীতে।ইতোমধ্যে ডিম ধরার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে হাটহাজারী উপজেলার ডিম আহরণকারীরা।প্রজনন মৌসুমে হলাদা নদীতে ড্রেজার ও ইঞ্জিনচালিত মালবাহী বোট চলাচলের উপর নিষিদ্ধ থাকার পরও নদী থেকে বালি উত্তোলন করছে অবাধে। এতে করে মা মাছ ড্রেজারের আঘাতে মারা যেতে পারে এবং মা মাছ চলাচলে বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এদিকে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুমে নৌযান ও ড্রেজার এবং জাল দিয়ে মাছ শিকারকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ রুহুল আমিন বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৩৫টি অভিযান পরিচলনা করে প্রায় এক লাখ মিটার জাল উদ্বার করে।
ডিম আহরনকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হালদা নদীতে প্রচন্ড বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন হলে মা মাছ ডিম ছাড়বে। গত মাসের প্রথম তিথিতে ডিম দেয়নি। পরবর্তী এপ্রিল মাসের ৪/৫ তারিখ অমাবশ্যার তিথিতে ডিম দিতে পারে মা মাছ। আর সেই সময়ে না দিলে একই মাসের পূর্ণিমার তিথি ১৯,২০,২১ এই ৩ দিনের মধ্যে মা মাছ ডিম দেওয়ার বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বশেষ মে মাসের অমাবশ্যার তিথির ৪,৫,৬ তারিখ পুরোদমে ডিম দিতে পারে।

প্রত্যেক বছর ডিম আহরণকারীরা ফাল্গুন মাস থেকে ডিম আহরণের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকে। এবারও ডিম আহরণকারীরা ইতোমধ্যেই তাদের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হালদা থেকে ডিম সংগ্রহ করতে মাটির কূয়া, নৌকা, জাল, বড় পাতিলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে ডিম আহরনকারীরা। আহরনকরীরা প্রহর গুনছে আকাশে কখন মেঘের গর্জন ও ভারি বর্ষণ আর পাহড়ি ঢল নামবে ।এগুলো হলে নদীদে রুই জাতীয় মা মাছ ডিম দেবে।

নদী থেকে ডিম আহরনের পর ডিম ফুটানোর জন্য প্রস্তুত মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি।

হাটহাজারী গড়দুয়ারা এলাকার ডিম আহনকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন,প্রতি বছরের মত এবারও ডিম আহরন করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
জোয়ারভাটার এ নদী হালদা যেখান থেকে রুই জাতীয় মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়। হাটহাজারী রাউজান উপজেলার সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া হালদা নদীতে স্মরণাতীত কাল থেকে প্রতি বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে ডিম ছাড়ে মা মাছ।নদী থেকে বছরের পর বছর ডিম সংগ্রহ করে তা থেকে রেণু ফুটিয়ে বিক্রি করে আর রেণুর আয় দিয়ে পুরো বছর জীবিকা নির্বাহ করে আহরণকারীরা।

 

পিবিএ/কেএএস/হক

 

আরও পড়ুন...