ইরানের বিপ্লবী গার্ডকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ ঘোষণা করবে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের সেনাবাহিনীর অভিজাত ও প্রভাবশালী শাখা রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কর্পস

পিবিএ ডেস্ক: ইরানের সেনাবাহিনীর অভিজাত ও প্রভাবশালী শাখা রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি)-কে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং আল জাজিরা’র।

এছাড়া তিন মার্কিন কর্মকর্তারা বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সও এ খবর প্রদান করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, সোমবার নাগাদ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিতে পারে।
অন্যদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনীকে প্রথমবারের আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী গ্রুপের তকমা দিতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।

সমালোচকরা হুশিয়ারি করে বলেন, বিদেশে বৈরী সরকারও মার্কিন সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে একই পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে বহু বছর থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা গুজব হিসেবেই শোনা গিয়েছিল।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কার্যালয় পেন্টাগন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে বলেছে।

গত বছর ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনের বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর থেকে দুই দেশের উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াল স্ট্রিটের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে আল জাজিরার কাছে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়ার পরামর্শ দেয় তারা। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা হোয়াইট হাউসের তরফ থেকেও ওয়াল স্ট্রিটের খবরের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনের বের হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে বিপ্লবী গার্ডকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি থেকে বের হওয়ার পর থেকে ইরানের সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মার্চে বেশ কয়েকটি কোম্পানির একটি নেটওয়ার্ক ও ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সময়ে তাদের বিরুদ্ধে আইআরজিসিকে অর্থায়ন করার অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র।

২০০৭ সালে আইআরজিসির হয়ে বিদেশে অভিযান চালানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখা কুদস ফোর্সের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদদ দেওয়ার অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দফতর। দাবি করা হয় কুদস ফোর্সের মাধ্যমে ইরান সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও বিদ্রোহী গ্রুপকে মদদ দেওয়ার কাজ করে থাকে।

২০১৭ সালে আইআরজিসির কমান্ডার আলি জাফরি বলেছেন, ট্রাম্প যদি তার বাহিনীকে সন্ত্রাসী গ্রুপ ঘোষণা করে তাহলে সারা বিশ্বে আমেরিকান সেনাবাহিনীকে ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি গোষ্ঠী বিবেচনা করবে বিপ্লবী গার্ড।

ইরানের ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির দায়িত্বও আইআরজিসির।

তেহরান সতর্ক করে দিয়ে আসছে তাদের কাছে দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সব ঘাঁটি তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার মধ্যে রয়েছে বলেও দাবি করে আসছে তারা।

সেনা, নৌ ও বিমান শাখা মিলিয়ে আইআরজিসির মোট সদস্য এক লাখ ২৫ হাজার বলে ধারণা করা হয়। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির কাছে সরাসরি দায়বদ্ধ এই বাহিনীটি।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...