দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানী, শিক্ষককের বিচার ও অপসারণের দাবীতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন


পিবিএ, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সিএসই বিভাগের চেয়্যারম্যান সহকারী অধ্যাপক ইঞ্জি: মো: আক্কাস আলীর বিচার ও অপসারণের দাবীতে ২য় দিনের মত ক্লাস বর্জন করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত শিক্ষক সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক আক্কাস আলীকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।

জানাগেছে, আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমি ভবনের ৪র্থ তলার সিএসই বিভাগের সামনে বসে অবস্থান কর্মসূচী শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন ধরনের লেখা প্লাকার্ড প্রদর্শন করে ওই শিক্ষকের বিচার ও স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবী জানায় শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি পূনর্গঠন ও তদন্তের নামে টালবাহানার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরী থেকে স্থায়ীভবে বহিস্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এঘটনায় রোরবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মোঃ আব্দুর রহিম খানকে সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মোঃ বশির উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ঈশিকা রায় ও এসিসিই বিভাগের সভাপতি ড. মোঃ কামরুজ্জামান। এই কমিটি আগামী ৫ দিনের মধ্যে লিখিত রিপোর্ট এবং সুপারিশ রেজিস্টার প্রফেসার ড. মোঃ নুরউদ্দিন আহমেদের কাছে জমা দিবেন।

এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রফেসার ড. মোঃ নুরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত অপর এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আক্কাস আলীকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে সভাপতির দায়িত্ব থেকে তাঁর দেয়া অব্যাহতি গ্রহন করে তাঁকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অব্যাহতি দেয়া হলো।

 

 

এছাড়াও, ভূক্তভোগী ছাত্রীদেরকে কোনভাবে যেন হয়রানি করা না হয় তার নিশ্চয়তা প্রদান করা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কোন ছাত্রীকে কার্যদিবস এবং অফিস সময় ব্যতিত অন্য সময়ে অফিস ছাড়া অন্য কোথাও ডাকতে পারবেন না, কোন শিক্ষার্থীকে কোন শিক্ষক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার হুমকি দিতে পারবে না, এরূপ প্রমানিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ইঞ্জি: মো: আক্কাস আলির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী অভিযোগ করেন ওই বিভাগের দুই ছাত্রী। গত ডিসেম্বর মাসে এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককের বিচার ও অপসারনের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রামে নামে শিক্ষার্থীরা।

পিবিএ/বিএস/জেডআই

আরও পড়ুন...