দোতলা বাসের চাকার নিচে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী

পিবিএ, ঢামেক : শারমিন আক্তার( ১২) মায়ের সাথেই ঘুরতে গিয়েছিলো মোহাম্মদপুরে এক বোনের বাসায়। সেখান থেকে সকালে বাসায় ফিরার জন্য মোহাম্মাদপুরে বিআরটিসি বাস স্ট্যান্ডে দোতলা বাসে উঠার সময় ধাক্কা ধাক্কিতে ওই বাসের চাকার নিচেই বাজে ভাবে পৃষ্ট হয় তার কোমর ও দুই পা। এখন মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে সে। চিকিৎসকরা বলছে, বাসের চাকায় পৃষ্ট হয়ে তার কোমড়ের অনেকগুলা হাড় খুব বাজে ভাবে ভেঙ্গেছে। পাশাপাশি তার প্রসাবের রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোমড়ের নিচের অংশের পায়ের হাড়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলার নুর আলমের মেয়ে শারমিন। মা আছিয়া খাতুনের সাথে থাকে পুরান ঢাকার সিক্কাটুলী নয়ারাস্তা ৪/১ নম্বর ইসহাকের বাড়িতে। স্থানীয় একটি স্কুলে ৫ম শ্রেণিতে পড়ে সে। মা অাছিয়া খাতুন বুয়ার কাজ করেন।
মা আছিয়া খাতুন বলেন, “গতকাল মোহাম্মদুরে আমার এক ভাগনী পাখির বাসায় যাই মেয়ে শারমিনকে নিয়ে। বাসায় ফিরার জন্য সেখান থেকেই দুজনে আজ সকাল ৯ টার দিকে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে যাই। বিআরটিসি’র একটি দুতলা বাস আসলে ভুল করে টঙ্গী গামী ওই বাসে তাড়াহুড়া করে উঠতে যাই। বাসটি একটু একটু চালছিলো তখনও। তখন বাসের সামনের দরজা দিয়ে উঠার সময় ধাক্কাধাক্কিতে শারমিন রাস্তায় পড়ে যায়। তখন বাসের সামনের চাকার নিচে তার কোমর ও দুই পা পৃষ্ট হয়।
বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে শারমিন। ৭-৮ বছর আগে তার বাবা নুর আলম তাদের ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এখন সাভার এলাকায় থাকে, এমনটিই তাদের জানায়। আর মা আছিয়া খাতুন বাসার পাশেই থালা-বাসুন ধোয়ার কাজ করেন।
স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা বিআরটিসি বাস কর্মচারী বাবু জানান, বাসটি মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে ঘুরাচ্ছিলো টঙ্গীর দিকে যাওয়ার জন্য। এমন সময় ওই মা মেয়ে তাড়াহুড়া করে বাসে উঠতে গিয়ে মেয়ে শারমিন রাস্তায় পড়ে যায়। পরে চাকার নিচে পৃষ্ট হয়।
সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ানহয়। সেখান থেকে দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।
ক্যাজুয়েলিটি কনসালটেন্ট ডাঃ আশরাফ উদ্দিন খান এর অধিনে ভর্তি রয়েছে এই স্কুলছাত্রী। জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত এক নারী চিকিৎসক জানান, তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তাকে যখন হাসপাতারে নিয়ে আসা হয় তখন তার পালস ছিলোনা, এখনও শকে আছে সে। এখন পর্যন্ত ৪ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে তাকে। তার জরুরী অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। তবে স্ট্রাবল না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছেনা তার।
পিবিএ/এইচএ/জেডআই

আরও পড়ুন...