পিবিএ ডেস্ক: রাত পোহালেই ভারতে লোকসভা নির্বাচন। ইতোমধ্যে সেখানে সরকার পক্ষ ও বিরোধীদের মধ্যে বাকযুদ্ধ চরমে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তান বিরোধিতাকে তার ভোট যুদ্ধের অন্যতম অস্ত্র বানিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি যখন বালাকোটের সামরিক অভিযানকেও নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার বানিয়ে বিরোধিদের ‘পাকিস্তানী’ বলে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন, ঠিক তখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মোদিকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, তিনি চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আবারো ক্ষমতায় আসুক। খবর এনডিটিভি ও জিয়ো নিউজের।
সাবেক ক্রিকেটারের এই রিভার সুইং মন্তব্যে বড় বেকায়দায় পড়েছেন মোদি। তাঁর এই মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। মোদিকে একহাত নিয়েছেন তার বিরোধীরা। কংগ্রেস থেকে শুরু করে আম আদমি পার্টি এবং কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি সবাই মোদিকে আক্রমণ করেছেন।
কংগ্রেসের মুখপাত্র রন্দীপ সিং সুরুজওয়ালা টুইটারে বলেন, পাকিস্তান এখন সরকারিভাবে মোদির সঙ্গে জোট করেছে। মোদিকে ভোট দেয়া মানে পাকিস্তানকে ভোট দেয়া। সুরজওয়ালা আরও বলেন, প্রথমে নওয়াজ শরীফ মোদির বন্ধু ছিলেন। এখন ইমরান তার বন্ধু হয়েছেন। এই সত্যটা পৃথিবী জেনে গেল।
আম আদমি পার্টির প্রধান ও দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ইমরান খানের এ বক্তব্যের পর এখন সবাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন। মোদিজি দয়া করে বলুন কেন ইমরান খান আপনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চাইছেন, আপনার সঙ্গে পাকিস্তানের কী সম্পর্ক, তাও জানান।
কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন বিজেপিকে যারা হারাতে চায়, তারা পাকিস্তানের পক্ষে। অথচ এখন ইমরান খান সরাসরি মোদির দলের জয় চেয়ে বসলেন।
কাশ্মীরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, মোদিভক্তরা এখন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শুভেচ্ছা জানাবেন কি না বুঝতে পারছেন না!
বুধবার একদল বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান খান বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি ক্ষমতায় এলে নয়াদিল্লির সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার ভালো সুযোগ তৈরি হবে।
ইমরান খান আরো বলেছেন, যদি ভারতের আগামী সরকার কংগ্রেসের নেতৃত্বে গঠিত হয়, তবে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো নিয়ে আতঙ্ক থেকে যাবে। কারণ তখন উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের কাছ থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসার ভয় থাকবে। কিন্তু যদি ডানপন্থী বিজেপি বিজয়ী হয়, তবে কাশ্মীর নিয়ে কিছুটা সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।
ভারতে মুসলিম ও অ-হিন্দুদের ওপর একের পর এক আক্রমণের কথাও বলতে ভোলেননি তিনি। ইমরান বলেন, ভারতে এখন যা সব হচ্ছে, কখনওই তা দেখতে হবে বলে ভাবিনি। মুসলিম ভাবাদর্শের উপর আক্রমণ চলছে। পরিচিতি বহু ভারতীয় মুসলিম আমাকে বলেছেন আগে ওরা ওদেশে অনেক ভালো ছিলেন। কিন্তু এখন ভালো লাগছে না। ওরা উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থানে উদ্বিগ্ন।
সবকিছু জেনে বুঝেও কাশ্মীর সমস্যা মেটানোর স্বার্থে তিনি মনে প্রাণে চাইছেন মোদী আবার ক্ষমতায় আসুক।
‘তারা (প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তার দল বিজেপি) নির্বাচন করতে চাইছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কায়দায়। ভয় দেখিয়ে। দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধের আবেগকে উস্কে দিয়ে।’
পিবিএ/এএইচ