নায়ক বা খল-নায়কের কোন উদ্দেশ্য নেই

actor-vilen-PBA

পিবিএ,ঢাকা: নীল চোখের অধিকারী খলনায়ক তাসকিন রহমান। যার শুরুটা হয়েছিল ‘ঢাকা অ্যাটাক’ দিয়ে। তার অভিনয়ে দর্শক মাত। তিনি খলনায়ক। তবে, সব সময়ের জন্য নয়। এবার নায়করূপে মাত করতে পর্দায় হাজির হচ্ছেন এই বাঙালী নীলচোখা পুরুষ। নববর্ষ উপলক্ষে প্রক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে তাসকিন রহমান অভিনীত ‘বয়ফ্রেন্ড’। নতুন ছবি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাতকার নিয়েছেন-পিবিএ।

‘বয়ফ্রেন্ড’ সিনেমায় আপনি নায়ক, কি ভাবছেন?

ছবির গল্প চমৎকার। গল্পের কারণেই ছবিটি করা। গতানুগতিক বাংলাদেশী ছবির জন্য এটি ছিল গবেষণা। ভবিষ্যতে এ রকম ছবিতে দেখা যাবে না। কাজ করার ইচ্ছেও নেই। তবে ছবিটির মেকিং ভাল। উত্তম আকাশ পরিচালিত, শাপলা মিডিয়া প্রযোজিত এ্যাকশন রোমান্সে ভরপুর ‘বয়ফ্রেন্ড’। এ ছবিতে বিনোদনের সব কিছুই রয়েছে। আমার বিশ্বাস এক শ্রেণীর দর্শকের কাছে ছবিটি ভাল লাগবে। সেমন্তী সৌমি নবাগত একজন সহশিল্পী হিসেবে খুবই ভাল অভিনয় করেছে।

‘মিশন এক্সট্রিম’ এর জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল?

বেশ ভাল প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। ছবিটির শুটিংয়ের জন্য গাজীপুর আছি। আমাদের চার দিনের ওয়ার্কশপ করানো হয়েছে। তারিক আনাম ভাইয়ের নেতৃত্বে শিল্পকলা একাডেমিতে ওয়ার্কশপ হয়। এবার আমাদের টিমটি অনেক বড়। আমরা সবাই ভালভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজে নেমেছি।

‘ঢাকা এ্যাটাক’ ছবির চেয়ে ‘মিশন এক্সট্রিম’-এ কতটা ব্যতিক্রমী চরিত্রে দেখা যাবে?

এবারের চরিত্রটি কঠিন বলব না তবে একজন অভিনেতা হিসেবে বড় চ্যালেঞ্জিং। ঢাকা এ্যাটাকে মানুষ ভিলেন চরিত্রে দেখেছে, এ ছবিতেও ভিলেন চরিত্রে দেখবে। তবে ‘মিশন এক্সট্রিম’ – এ ভিন্ন একেবারে উল্টো দেখা যাবে। দুটির সঙ্গে কোন মিল নেই।

আসছে কাজগুলোতে দর্শক আপনাকে খল চরিত্রে দেখতে পাবে?

তা দর্শক ও প্রযোজকদের চাহিদাই বলে দেবে। তারা চাইলে আপত্তি নেই। আমি কখনোই নিজেকে নায়ক বা ভিলেন হিসেবে চিন্তা করি না। আমার উদ্দেশ্য অভিনয়। সেটা নায়ক-ভিলেন যেটা হোক না কেন! অনেকের একটি উদ্দেশ্য থাকে। তবে আমার সে রকম উদ্দেশ্য নেই। মানুষের ভাললাগার জোয়ার আমাকে যে দিকে নিয়ে যাবে আমি সে দিকেই যাব। তবে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয় মোটেও ছাড় দিতে নারাজ; সেটা হচ্ছে অভিনয়ের জায়গা থাকতে হবে।

নতুন ছবির খবর?

নতুন একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ছবির নাম ‘সান’। মে থেকে শুটিং শুরু হবে। এটি পরিচালনা করবেন এম এ রাহিন। তবে ছবির নাম পরিবর্তন হতে পারে। চরিত্র কিংবা গল্প নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। এখন শুটিং এর প্রস্তুতি চলছে। যৌথপ্রযোজনার ছবিতে কাজ করতে আপওি নেই। একটি যৌথ প্রযোজনার ছবির ব্যাপারে কথা চলছে। যৌথ কিংবা একক প্রযোজনা দুটিতেই আগ্রহী।

অভিনয়ে আসার প্রেরণা কে?

শিল্প চর্চায় আমার বড় প্রেরণা বাবা-মা। ছোটবেলা থেকেই তারা সাপোর্ট করে আসছেন। একটু বড় হলে বন্ধুবান্ধব থেকে অনেক উৎস পেয়েছি। উৎস বা সাফল্য পেলেই হয় না নিজের চেষ্টা থাকতে হয়। সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পছন্দ করি। ব্যস্ততা ভালবাসী।

গান নিয়ে পরিকল্পনা?

গান ভালবাসী, গান করতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের মিউজিক রিলেটেড প্রজেক্ট করতে আগ্রহী। সামনে গান নিয়ে পরিকল্পনা আছে। আমি পেইনটিংও করি। চলতি বছর একটি একক প্রদর্শনী করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শুনলাম অভিনয়ের জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন?

একটি বিষয় যোগ করতে চাই যে, পত্রিকায় বলাবলি হয়েছে আমি সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে এসেছি ছবি করার জন্য! কথাটা পুরোপুরি ঠিক না। আসলে আমি সব কিছু ছেড়ে আসিনি। এখনও আমার সব কিছুই আছে। তবে কোম্পানির সঙ্গে কন্টাক্টে কাজ করব। অভিনয়ের জন্য ব্যস্ততা বেড়েছে ঠিক। তবে কোন দেশেই ফুল টাইম চাকরির ক্ষেত্রে দুই তিন মাস পর পর ছুটি দিবে না। যেহেতু তাদের সঙ্গে বেশ কিছু বছর যাবত কাজ করছি তাই তারা আমাকে একটা অফার দিয়েছে যে, আপনি যখনই অভিনয়ের পর ফ্রি সময় পাবেন তখনই আবার কাজে যুক্ত হবেন। তাদের সঙ্গে গত আঠারো বছর যাবত কাজ করছি। তারা আমার প্রতি অনেক যত্নশীল। তবে অবশ্যই বাংলাদেশে আমাকে অনেক বেশি সময় কাটাতে হবে। আমার বসবাস ওখানে। দু-হাজার দুই সাল থেকে ওখানে থাকছি এবং দুই হাজার সাত সাল থেকে সেখানকার নাগরিক। অনেক কষ্ট করে ওখানে একটা স্থান করেছি। সেটা তো একেবারে ছেড়ে দিয়ে আসতে পারি না। তাই অভিনয়ের ফাঁকে যখনই সময় পাব তাদের সঙ্গে কাজ করব।

আগামী পাঁচ বছর পর নিজেকে কোন অবস্থানে দেখতে চান?

নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হিসেবে দেখতে চাই। ইতোমধ্যে দর্শকের যে ভালবাসা পেয়েছি তা ভবিষ্যতে আরও ভাল করতে অনুপ্রেরণা দেবে।

বাংলাদেশের সিনেমার বর্তমান অবস্থা আপনার কাছে কেমন মনে হয়?

বাংলাদেশের সিনেমার বর্তমান অবস্থা যতটুকু শুনেছি বা জেনেছি এই মুহূর্তটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জিং। দেশের মানুষের সুস্থ বিনোদন খুব দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে এখন যে ধরনের অপরাধ হচ্ছে সেগুলো কিছুটা হলেও কমে যাবে। বিনোদনের সুযোগটা বাড়লে আমাদের জন্যও ভাল, ইন্ডাস্ট্রিয়ার জন্যও ভাল।

আরও পড়ুন...