পিবিএ ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন অনেকগুলো ভিসার মধ্যে প্রধানতম ভিসা হচ্ছে জেনারেল স্কিলড মাইগ্রেশন (জিএসএম) ভিসা। দেশটিতে দক্ষ পেশাদারদের যেমন কদর রয়েছে, তেমনই যোগ্যতা প্রমাণিত হলে স্থায়ী বসবাসের মতো সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে। আর এ যোগ্যতা প্রমাণের উপায় হলো বিভিন্ন বিষয়ে পয়েন্টভিত্তিক স্কোর করা। পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে যে ভিসা দিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ হবে অস্ট্রেলিয়ায়, সেগুলো হলো জেনারেল স্কিলড মাইগ্রেশন (জিএসএম) ভিসা। জিএসএম ভিসায় সরাসরি আবেদনের সুযোগ নেই। বয়স, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা ইত্যাদি নানা বিষয়ের ওপর সর্বনিম্ন আবশ্যিক প
য়েন্ট করতে পারলে আবেদনের সুযোগ পাওয়া যায়। এ জন্য অনলাইনভিত্তিক এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্টে (ইওআই) অংশ নিতে হয়। নির্বাচিত হলে অভিবাসন বিভাগ মূল ভিসায় আবেদনের আমন্ত্রণ জানাবে। সাবক্লাস ১৮৯, ১৯০ ও ৪৮৯ ভিসা জিএসএম ভিসার অন্তর্গত। বর্তমানে এ ভিসার সর্বনিম্ন আবশ্যিক পয়েন্ট ৬৫। এ পয়েন্ট কীভাবে গণনা করা হয় সে নিয়ে আলোচনা থাকছে নিচে।
বয়স: জিএসএম ভিসায় বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ভিসা প্রত্যাশী ২৫ পয়েন্ট পাবেন। ২৫ থেকে ৩২ বছর বয়সীরা পাবেন ৩০ পয়েন্ট। এর বেশি বয়সীদের পয়েন্ট আবার কমতে শুরু করবে। ৩৩ থেকে ৩৯ বছর বয়সীরা পয়েন্ট পাবেন ২৫ এবং ৪০ থেকে ৪৪ বয়সীরা ১৫ পয়েন্ট পাবেন। ৪৪ বছরের বেশি বয়সীদের জিএসএম ভিসায় আবেদনের সুযোগ থাকছে না।
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার ওপর পয়েন্ট রয়েছে জিএসএম ভিসায়। ‘কম্পিটেন্ট’ (আইইএলটিএস–এর সকল বিষয়ে ৬ স্কোরের সমতুল্য) ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য কোনো পয়েন্ট নেই। ‘প্রোফিসিয়েন্ট’ (আইইএলটিএস–এর সকল বিষয়ে ৭ স্কোরের সমতুল্য)–এর জন্য ১০ পয়েন্ট। ‘সুপারিয়র’ (আইইএলটিএস–এর সকল বিষয়ে ৮ স্কোরের সমতুল্য) ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য ২০ পয়েন্ট থাকছে।
অভিজ্ঞতা: ইওআই পূরণের পূর্ববর্তী ১০ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে একটি পেশায় ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতার জন্য কোনো পয়েন্ট নেই। তবে তিন থেকে চার বছরের জন্য ৫ পয়েন্ট, পাঁচ থেকে সাত বছরের জন্য ১০ পয়েন্ট এবং আট থেকে ১০ বছরের জন্য ১৫ পয়েন্ট পাওয়া যাবে। তবে অস্ট্রেলিয়ায় এক বছর কাজের অভিজ্ঞতার জন্য কোনো পয়েন্ট নেই। এ ছাড়া এক থেকে দুই বছরের জন্য ৫ পয়েন্ট ও তিন থেকে চার বছরের জন্য ১০ পয়েন্ট রয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ থেকে সাত বছর অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতার জন্য ১৫ পয়েন্ট ও আট থেকে ১০ বছরের অভিজ্ঞতার জন্য ২০ পয়েন্ট সংগ্রহ করা যাবে। তবে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা তখনই পয়েন্টের জন্য গণ্য হবে যদি ভিসা প্রত্যাশী সাবস্ট্যানটিভ ভিসা অথবা ব্রিজিং ভিসা–এ বা বি ভিসা থাকাকালে কাজ করে থাকেন। এ ছাড়া অন্য কোনো ভিসার কর্ম অভিজ্ঞতার জন্য কোনো পয়েন্ট পাওয়া যাবে না।
শিক্ষা: জিএসএম ভিসার পয়েন্ট সংগ্রহে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য থাকছে ২০ পয়েন্ট। ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা ১৫ পয়েন্ট ও আন্ডার গ্র্যাজুয়েটরা ১০ পয়েন্ট পাবেন। শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ান অথবা কোনো অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বীকৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হতে হবে। এ ছাড়া পেশা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডক্টরেট বা মাস্টার্স ডিগ্রি কোর্সে কমপক্ষে দুই বছর অধ্যয়ন করলে অতিরিক্ত ৫ পয়েন্ট পাওয়া যাবে।
পয়েন্টভিত্তিক জেনারেল স্কিলড মাইগ্রেশন ভিসায় আরও অনেক বিষয়েই পয়েন্ট সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। এ জন্য জিএসএম ভিসার আবশ্যিক শর্তগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। জিএসএম ভিসাসংক্রান্ত আরও বিস্তারিত পরবর্তী লেখায় থাকবে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগের ওয়েবসাইট থেকেও জানা যাবে।
পিবিএ/হক