নুসরাত হত্যা: ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন: ফাইল ছবি

পিবিএ,ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

আজ সোমবার (১৫এপ্রিল) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ মামলা দাখিল করেন।

দুপুর ১টার দিকে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে এ অভিযোগ করা হয়। এ বিষয়ে আজই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, নুসরাত থানায় অভিযোগ দিতে গেলে তার ভিডিও করে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারার লঙ্ঘন। এই অভিযোগেই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ যৌন হয়রানির অভিযোগ দিতে নুসরাত সোনাগাজী থানায় গেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ও পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন। আর সেই জিজ্ঞাসাবাদের সময়ের ভিডিও করেন তারা।

উল্লেখ্য, যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে যাওয়ার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত ওসির কক্ষে আরেক দফা হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল নুসরাতকে। ওসি নিয়ম না মেনে জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, থানার ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাত। আর সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ দু’হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওসি মোয়াজ্জেম অনুমতি ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা করেন এবং তা ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায় ওসি মোয়াজ্জেম অত্যন্ত অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষায় একের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছেন নুসরাতকে। নুসরাতের বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নও করতে দেখা যায় ওসি মোয়াজ্জেমকে।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...