পিবিএ ঢাকা: দেশে অব্যাহত নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই দেশে ধর্ষণ বেড়েছে। এ ধরনের ঘটনা রোধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও রাজনীতিবিদদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
শুনানি শেষে আদালত এ ঘটনায় রুল জারি করেন। রুলে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ মীমাংসার নামে তথাকথিত সালিশি বৈঠক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
সুবর্ণচরের মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরমাকছুমুল গ্রামে গত ২ মার্চ এক নারীকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার ঘটনা সালিশে মীমাংসা হয়। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মুনতাসির মাহমুদ রহমান। শুনানিতে তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি ৬০ হাজার টাকায় মীমাংসা করে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরু। পরে ধর্ষক আলাউদ্দিনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, ফৌজদারি মামলা হয়েছে কি? যিনি ইউপি সদস্য তাকে আসামি করা হয়েছে? ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার মামলা হয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা গ্রাম আদালতে বিচারের সুযোগ নেই। ইউপি সদস্য বেআইনিভাবে এ কাজ করেছেন। আত্মহত্যার শিকার ওই নারীর বাবা থানায় মামলা করেছেন। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় একজন বাবা যদি বিচার না পান, তাহলে সমাজ কোথায় চলে গেছে?
এ সময় আদালত বলেন, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে দেড় বছরের শিশু থেকে ছয় সন্তানের জননী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এ জন্য রাজনীতিবিদ ও শিক্ষকদের সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করতে হবে। এ পর্যায়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, শিক্ষকদের কেউ কেউ ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ছেন। যেমন ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাতের ঘটনা অন্যতম।
আদালত বলেন, নুসরাতের শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলার পর অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে গভর্নিং বডির সদস্যরা মিছিল করেছেন। যদি শুরুতে ওই শ্লীলতাহানির ঘটনায় মাদ্রাসার গভর্নিং বডি ও স্থানীয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিত তাহলে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটত না। আদালত বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বিষয়টি নজরদারি করছেন। তদন্তও অনেকদূর এগিয়েছে।
পিবিএ/হাতা