কেরাণীগঞ্জ কারাগার খালেদা জিয়ার জন্য প্রস্তুত

কেরাণীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর পাশে নবনির্মিত মহিলা কারাগারের সার্বিক কার্যক্রম প্রস্তুত করা হয়েছে

পিবিএ,ডেস্ক: কেরাণীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর পাশে নবনির্মিত মহিলা কারাগারের সার্বিক কার্যক্রম প্রস্তুত করা হয়েছে। আপাতত এ কারাগারে বন্দী হিসাবে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাখার পরিকল্পনা কারা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে চুড়ান্ত করা হয়েছে।

সেই লক্ষ্য কারা অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশের একটি একতলা ভবনের ৪টি রুমের ভেতর ও বাইরের ডেকোরেশন সম্পন্ন হয়েছে। আর কারাগারের দেয়াল সংলগ্ন ৩টি রুমের একটিতে খালেদা জিয়ার বিচারকাজ পরিচালনায় আদালত বসানোর পরিকল্পনা অনেকটা চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে কারা কর্তৃপক্ষকে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এখনো সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডাক্তারের পরামর্শে তাকে যে কোন সময় আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হতে পারে।

যদি কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হয় তাহলে তাকে পুরনো ঢাকার জরাজীর্ণ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নয়, নেয়া হবে কেরাণীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে নির্মিত নয়নাভিরাম দেশের দ্বিতীয় মহিলা কারাগারে। এই কারাগারের নির্মাণ কাজের প্রস্তুতি শতভাগ সম্পূর্ণ হয়েছে।

শিডিউল অনুযায়ী আগামীকাল শনিবার সকাল ৯টায় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা মহিলা কারাগারের কাজের সার্বিক অগ্রগতি সরেজমিন দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে। এরআগে গত মাসেও তিনি এ কারাগার পরিদর্শন করেছেন। তখন মহিলা কারাগারে বিদ্যুত, পানির লাইনসহ অন্যান্য মোট ১০ শতাংশ কাজ বাকী ছিলো।

কারা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, শনিবার সকাল ৯টায় আইজি প্রিজন্স ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কেরানীগঞ্জের মহিলা কারাগার পরিদর্শনে আসবেন। এরআগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দুপুরে এবং বিকেলে কারাগারের ভেতর ও বাইরের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করেন বলে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নবনির্মিত কারাগারটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর এখানে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সেই লক্ষ্য কারাগারের প্রধান গেট দিয়ে ঢুকে ডান পাশের (পশ্চিম) ৩টি ভবনের পরের একটি একতলা ভবনের ৪টি রুমের ডেকোরেশন করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রতিটি রুমে লাগানো হয়েছে এয়ারকন্ডিশন। বাথরুমে হাই কমোড বসানো হয়েছে। বিদ্যুত লাইন, পানির লাইন লাগানো ছাড়াও লাগানো হয় ঝরণা।

তার রুমের চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। আইজি প্রিজন্স ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী শনিবার কারাগার পরিদর্শন এর বিষয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, নবনির্মিত কারাগার নির্মাণের কাজ সন্তোষজনক কি-না সেটি দেখাই মূলত পরিদর্শনের উদ্দেশ্য।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কারাগারের বাইরের দেয়াল সংলগ্ন ৩টি ঘরের (গুদাম) মধ্যে মাঝখানের একটি ঘরকে আদালত এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

কবে নাগাদ খালেদা জিয়াকে এই মহিলা কারাগারে আনা হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যে কোন সময় আনা হবে। যদি তাকে (খালেদা) এ কারাগারে আনা হয়, তাহলে আপাতত অন্য কোন মহিলা বন্দীকে আর এখানে রাখা হবে না।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর কারা মহাপরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি। পরে ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স টিপু সুলতান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি এই মুহুর্তে ঢাকার বাইরে রয়েছি। তাই পরিদর্শনের বিষয়টি বলতে পারছি না।

উল্লেখ্য সারাদেশে মোট ৬৮ কারাগারের মধ্যে একমাত্র কাশিমপুরে রয়েছে মহিলা কারাগার। এরপর কেরাণীগঞ্জের এ কারাগারটি হচ্ছে দ্বিতীয় মহিলা কারাগার।

পিবিএ/হাতা

আরও পড়ুন...