পিবিএ, মৌলভীবাজার: মুক্তা মনির মত বিরল রোগে আক্রান্ত কমলগঞ্জের বাবলি আক্তার (৮) কে ছাড়পত্র দিল পিজি হাসপাতাল। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ছতিয়া গ্রামে বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলি আক্তার কে নিয়ে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করলে বিভিন্ন মানুষের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি গরিব এন্ড এতিম ট্রাস্ট ইউকে নামক একটি সামাজিক সংগঠন (২ লক্ষ টাকার) চিকিৎসা সেবা দিতে এগিয়ে আসে।
শুরুতে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা.ইকবাল হাসানকে বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলির রোগ সম্পর্কে অবহিত করলে তিনি জানান এটি ফাইলেরিয়ার কম্লিকেশন এলিফেন্থিয়াসিস (গোদ রোগ) অথবা টিউমার জাতীয় গ্রোথ হতে পারে। মেয়েটিকে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল অথবা পিজি হাসপাতালে পাঠানো যেতে পারে। গরিব এন্ড এতিম ট্রাস্ট ইউকে সংগঠনটি কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও কমলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে অবহিত করে চিকিৎসার জন্য বিরল রোগী বাবলি আক্তারকে ঢাকা নিয়ে যায়।
বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলি আক্তারের মায়ের ও গরীব এন্ড এতিম ট্রাস্ট ইউকে বাংলাদেশ সমন্বয়কারী তুহিন আহমদ থেকে জানা যায়, বাবলি আক্তার কে প্রথমে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলে, আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত ডাক্তার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেরণ(রেফার)করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্যরত ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাবলি আক্তারের বিরল রোগের আক্রান্ত স্থান, পা থেকে কিছু নমুনা( মাংস) নেওয়া হয়,রোগ সনাক্ত করার জন্য।প্রায় এক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবলি আক্তারের আক্রান্ত স্থান পা অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলার জন্য বলেন।
বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলি আক্তারের অপারেশনে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলে ডাক্তার বাবলির মা কে অবহিত করলে তিনি অপারেশন না করিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাবলির মা খাতুন বেগম(৩৫) বলেেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে এসেছেন প্রায় চার মাস অতিবাহিত হয়েছে।
আক্রান্ত শিশু কন্যা বাবলি আক্তারর সাথে আলাপ করলে জানা যায়, আক্রান্ত স্থান পায়ে মাঝে মাঝে অসহ্য ব্যাথা অনুভব হয়, তখন আর সহ্য হয় না, চিৎকার কাঁদি। এই অসহ্য ব্যথা নিয়ে রোগের সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে আছে বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলি আক্তার।
স্থানীয়রা বলেন বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলি আক্তার কে যদি ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়, হয়তো সে সুস্থ হতে পারে।কিন্তু পিতাহীন দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এত টাকা খরচ করে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করা কখনোই সম্ভব নয়। যদি সরকারি বা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান বিরল রোগে আক্রান্ত বাবলি আক্তার এর চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসে হয়তো বেঁচে যাবে একটি জীবন। বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু কন্যা বাবলি এখনো স্বপ্ন দেখছে, সে সুস্থ হবে, আগের মতো আবার চলাফেরা করবে এবং সহপাঠীদের সাথে স্কুলে যাবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন থেকে ১০ হাজার টাকা সর্ব মোট ষাট(৬০) হাজার টাকা প্রদান করবেন বলে জানান।
পিবিএ/এমএ/হক