খুলনায় ওয়াসার পানিতে দূর্গন্ধ

খুলনায় ওয়াসার পানিতে দূর্গন্ধপিবিএ,খুলনা: খুলনা ওয়াসার পানি পান করেন না নরগরবাসি। এমনকি থালা-বাসন ধুতেও অনীহা গৃহিনীদের। গ্রাহকদের অভিযোগ, অধিকাংশ সময়ই ওয়াসার সরবরাহ করা পানি ঘোলা থাকে। তাতে ময়লা ও দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। তাই পানের জন্য তারা লাইনের পানি বাদ দিয়ে গভীর বা অগভীর নলকূপের পানি পান করেন।

নগরীর মিউিনিসিপ্যাল ট্যাংক রোডের বাসিন্দা আঃ আজিজের বাসায় রয়েছে ওয়াসার পানির পাইপলাইন। তিনি বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে ওয়াসার পানিতে বিকট দূর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ওই পানি দিয়ে ওজুও করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

তার বাড়ির ভাড়াটিয়া গৃহিনী জোৎস্না পারভীন বলেন, ওয়াসার পানিতে ঘোলাটে ভাব এবং দূর্গন্ধ থাকায় তা ঘর গৃহাস্থলির কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই সব পানি বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। এতে তাদের সংসার খরচ বেড়ে গেছে। সূত্র অনুযায়ি, ২০০৮ সালে খুলনা ওয়াসার সৃষ্টি হয়। তার আগে খুলনা সিটি করপোরেশন নগরীতে পানি সরবরাহের পাইপলাইন স্থাপন করেছিল। ওই পাইপলাইন পরিস্কার করার কোনো সুযোগ নেই। তবে কোথাও লিকেজ হলে সেখানে পাইপ পরিস্কার ও সংস্কার করা হয়।

নগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা ও গ্লোবাল খুলনার আহ্বায়ক শাহ মামুনুর রহমান তুহিন জানান, খুলনায় ওয়াসার পাইপলাইনের পানি কেউ পান করে না। তিনি নিজেও পান করেন না। কারণ এই পানি পানের উপযুক্ত নয়। এ ছাড়া নগরীর বয়রা এলাকার বাসিন্দা ও বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন, রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও সংগঠনের মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান, টুটপাড়া জাকারিয়া সড়কের বাসিন্দা চশমা ব্যবসায়ী হুমায়ূন কবীরসহ আরও অনেকেই জানান, তারা কেউই ওয়াসার পানি পান করতে পারেন না।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ দাবি করেন, ওয়াসার পানি পানের পুরোপুরি উপযোগী। কারণ তারা গভীর নলকূপের সঙ্গে পাম্প বসিয়ে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করেন। পরে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের সরবরাহ করা হয়। ওয়াসার পানিতে কোনো ময়লা, পোকা বা দুর্গন্ধ নেই বলেও দাবি করে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে এ পানি পরীক্ষা করে দেখা হয়।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, কোথাও কখনও পাইপ লিকেজ হলে তখন পানির রঙ কালচে বা ঘোলা হতে পারে বা দুর্গন্ধ আসতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিযোগ পেলে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হয়। তিনি বলেন, অনেক গ্রাহক তার বাড়ির পানির রিজার্ভার বা ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিস্কার করেন না। সেক্ষেত্রে পানিতে ময়লা, দুর্গন্ধ বা ছোট ছোট পোকা আসতে পারে। তাই পানির রিজার্ভার বা ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিস্কার করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন করতে শিগগিরই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তবে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এ বক্তব্য মানতে রাজি নন বেশিরভাগ গ্রাহক। নগরীর বসুপাড়া নাজিরঘাট এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী বাবুল হাওলাদার বলেন, তিনি প্রতি মাসে এক-দুইবার বাড়ির প্লাস্টিকের ট্যাঙ্ক পরিস্কার করেন। তারপরও ঘোলা পানি আসে। এ বিষয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে বলেও কাজ হচ্ছে না।

পিবিএ/এইচআর/আরআই

আরও পড়ুন...