বিজিবি ও এ্যাসিল্যান্ডক মারপিটের পর আ’লীগ নেতাকে কোপালো নওশাদ

পিবিএ,লালপুর (নাটোর): বিজিবি কর্মকর্তা এবং এ্যাসিল্যান্ডকে মারপিটের পর আলোচনায় এসেছিলেন বাঘার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী ও নানা অপকর্মের হোতা নওশাদ আলী। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আবার পুকুর দখল ও মাছ ধরার ঘটনায় আজবার আলী নামের স্থানীয় এক আ’লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে নওশাদ আলী। আজবার আলী লালপুর উপজেলার গন্ডবিল গ্রামের নুর মোহাম্মাদের ছেলে এবং দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদ। এ ঘটনায় আহতের চাচাত ভাই ওমর ফারুক বাদী হয়ে শুক্রবার দুপুরে লালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

লালপুর থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালপুর উপজেলার বসন্তপুর বিলে পাঁচ বছর আগে একটি পুকুর খনন করেন বাঘা উপজেলার ছাতারি গ্রামের পাঁচু সরকার ও লালপুর উপজেলার গন্ডবিল গ্রামের ওমর ফারুক। এ পুকুর খননের পর কিছু দিন উভয়ে মাছ বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নিত। গত বছর পাঁচু সরকার তার অংশ আত্নীয়

বিজিবি কর্মকর্তা এবং এ্যাসিল্যান্ডকে মারপিটের পর আলোচনায় এসেছিলেন বাঘার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী ও নানা অপকর্মের হোতা নওশাদ আলী
আজবার আলী

(ভাইরা) বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামের আলোচিত নওশাদ আলীর কাছে বিক্রি করে দেন। এর পর থেকে নওশাদ আলী জোর পুর্বক পুরো অংশ একাই ভোগ দখল করেন।

মামলার বাদি ওমর ফারুক জানান, ‘তিনি ঢাকায় থাকেন এবং তাঁর দুই ভাই দেশের বাইরে থাকেন। এ কারনে তাদের সকল জমা জমি তার চাচাত ভাই আজবার আলী। ২৬ এপ্রিল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আজবার আলী পুকুরে মাছ ধরতে আসলে নওশাদ আলী ও তার লোকজন আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে ডান পা’য়ে উপর কোপ দয়। এ ঘটনায় আজবার আলীর পায়ের রগ কেটে যায়। পরে আজবার আলীকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে লালপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার আরসাদ আলী জানান, আজবার আলীর শারিরিক অবস্থা খুব খারাপ। তার ডান পায়ের একটি রগ কেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে নওশাদ আলী ওই পুকুর তার নিজের বলে দাবি করে জানান, আমি কাউকে কোপ দেয়নি, আমার পুকুরে জোর পূর্বক মাছ ধরছিল আজবার ও তার লোকজন। এ সময় তাকে মাছ ধরতে নিষেধ করায় তারা আমাকে মারপিট করে। আজবার আলী আমাকে মারপিট করতে গিয়ে ইদুরের গর্থে পড়ে তার হাতে থাকা হাসুয়ায় পা কেটে গেছে। লালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, দুই পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, নওশাদ আলী সেনাবাহিনীতে সিপাহী পদে চাকরি করতেন। সেখান থেকে চলে আসার পর এলাকায় চোরাচালান ব্যবসা শুরু করে। এ ব্যবসা চালাতে গিয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি’র এক সুবেদারকে মারপিট করে। পরে চোরাচালান থেকে সরে গিয়ে বালু মহলের ব্যাবসা ও আদম ব্যাবসা শুরু করে। ১৯ জানুয়ারী পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় কাগজপত্র দেখতে চান বাঘা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ইমরুল কায়েস। এ সময় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ইমরুল কায়েস সহ তার দুই কর্মচারীকে মারপিট করে এলাকা ত্যাগ করে নওশাদ আলী।

তারপর নওশাদ আলীর বিরুদ্ধে মানববন্ধর কর্মসুচী পালন করেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর আগে আদম ব্যবসার ঘটনায় ফরিদপুর থানায় নওশাদ আলীর নামে অর্ধকোটি টাকা প্রতারণা মামলা হয়। এ বিষয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসীন আলী জানান, এ্যাসিল্যান্ডকে মারপিটের ঘটনায় নওশাদ আলীর মোবাইল ট্যাকিং এর মাধ্যমে ঢাকা বিমান বন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল,বর্তমানে সে জামিনে রয়েছে।

পিবিএ/এমআই/আরআই

আরও পড়ুন...