পিবিএ,বিনোদন : পরপর কাজ করছেন। তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া চর্চার জবাব দিলেন জয়া আহসান । সম্প্রতি জয়া আহসান কথা বলেন বার্তা সংস্থা পিবিএ’র সাথে । পাঠকদের উদ্দেশ্যে কথোপকথনের চুম্বক অংশ হুবুহু তুলে ধরা ।
পিবিএ: আপনার নাগাল পাওয়া তো ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে!
জয়া আহসান : হিমশিম খাচ্ছি। বাংলাদেশে মেয়েদের ফুটবল টুর্নামেন্টের আমি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। পরের প্রযোজনা ‘ফুড়ুৎ’-এরও প্রি-প্রোডাকশন চলছে। এখানে যা পরিস্থিতি, শুট করা খুব চাপের।
পিবিএ: এটা কি জানেন, আপনার কারণে কলকাতার অনেক শিল্পীর মাথা গরম হয়ে রয়েছে…
জয়া আহসান : এ বাবা! তা কেন?
পিবিএ: আপনি এখানে পরপর ছবির কাজ পাচ্ছেন। এতে অনেক অভিনেত্রীরই সমস্যা হচ্ছে।
জয়া আহসান : দেখুন জয়া আহসানকে যেমন এই ইন্ডাস্ট্রির দরকার, তেমন অন্য অভিনেত্রীদেরকেও দরকার। কেউ কারও জায়গা কেড়ে নিতে পারে না। আবার কেউ কারও পরিপূরক নয়। আমি তো কোয়েল বা নুসরতকে দেখে অবাক হয়ে যাই। ওরা যে ভাবে পারফর্ম করে, আমি তো পারি না।
পিবিএ: টলিউডে আরবান ছবির অনেক অভিনেত্রীর মনে হয়, আপনার চরিত্রগুলো তাঁরাও করতে পারতেন।
জয়া আহসান : এমনও তো হতে পারে, আমাকে দেখার পরে কোনও পরিচালকের মনে হল, এর জন্য একটা চরিত্র ভাবা যেতে পারে। কৌশিকদা (গঙ্গোপাধ্যায়) ‘বিসর্জন’ ভেবেছেন। আমি হয়তো কাউকে ইন্সপায়ার করেছি। খুব বেশি কাজ তো করি না। আমার মতে, ইন্ডাস্ট্রিতে সকলেরই কাজের সুযোগ আছে।
পিবিএ: সামনে ‘কণ্ঠ’ মুক্তি পাচ্ছে। স্পিচ থেরাপিস্টের চরিত্রের জন্য কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
জয়া আহসান : আমার করা বাকি ছবির চেয়ে ‘কণ্ঠ’ আলাদা। সম্পর্কের টানাপড়েনের গল্প তো অনেক করলাম। ‘কণ্ঠ’ ভীষণ ইন্সপায়ারিং একটা ছবি। ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পও বলে। স্পিচ থেরাপিস্টের চরিত্রের জন্য ওয়র্কশপ করেছি। তা ছাড়া শিবুদা (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতাদি (রায়) তো ছিলেনই।
পিবিএ: আপনার জীবনে কোনও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প রয়েছে?
জয়া আহসান : আমার কেন, সকলের জীবনেই রয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে, সেখান থেকে আমাকে ঘুরে দাঁড়াতেই হতো। ক্রাইসিসে পড়ে আমরা লাইনচ্যুত হয়ে যাই। কেউ স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে, কেউ এলোমেলো সম্পর্ক তৈরি করে, কেউ আত্মহত্যা করে… এমন সময়ে একমাত্র কাজই পারে মানুষকে বাঁচাতে। আমিও সেই রাস্তাই নিয়েছিলাম। কাজকে আঁকড়ে ধরেছিলাম। ওটাই আমার প্রার্থনার জায়গা, বাঁচার রসদ।
পিবিএ: আপনার বাংলার সঙ্গে কলকাতার বাংলার ডায়লেক্টে তফাত আছে। এটা কি কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে?
জয়া আহসান : প্রথমে করত। সেই জড়তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছি। এই শহরের সঙ্গে আত্মীয়তা তৈরি হয়েছে। এখানে এলে আপনাদের মতো করে কথা বলি। আবার বাংলাদেশে ওখানকার মতো।
পিবিএ: শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছেন। কী উপলব্ধি?
জয়া আহসান : তিন জনেই খুব সংবেদনশীল মানুষ। মাস আর ক্লাসকে কী করে মেলাতে হয় শিবুদা-নন্দিতাদি দেখিয়ে দিয়েছেন। কৌশিকদা খুব অর্গানাইজ়ড। আর সৃজিত তো কাজ পাগল। মাঝে মধ্যে ভাবি, উনি এত কাজ কী ভাবে করেন!
পিবিএ: প্রথম সারির তিন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছেন। এর পরেও বলবেন আপনাকে কারও হিংসে হবে না!
জয়া আহসান : এই তিন জনের মধ্যে আরও একটা মিল রয়েছে। ছবির জন্য যাকে প্রয়োজন, এঁরা তাকেই নেবেন। এমনিতে আমি শত সাধলেও নেবেন না। যেমন সৃজিত, ছবিতে যাকে দরকার, তাকে নেওয়ার জন্য সব কিছু করতে পারেন। যেখানে নেওয়ার নয়, কিছুতেই নেবেন না। আমি পা ধরে সাধলেও নেবেন না! এটা তিন জনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
পিবিএ: তখন নিজের ভাষাই বেরিয়ে আসত বলুন?
জয়া আহসান : একদম। নিজের ভাষায় আচ্ছা করে দু’কথা শুনিয়ে দিতাম (হাসি)!
পিবিএ: সর্বশেষ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
জয়া আহসান : আপনাকেও ধন্যবাদ
পিবিএ/এমএস