খালেদা জিয়ার খালাসের আপিল গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট

পিবিএ ডেস্ক: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া দণ্ড চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আবেদন মঙ্গলবার গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি বিচারিক আদালতের রায়ে দেওয়া ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড স্থগিত করেছে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুছ জামানের বেঞ্চ। দুর্নীতির এ মামলায় গত বছরের ২৯ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারদণ্ড দেয়া হয়।

এছাড়াও ওই ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতে থাকা ওই মামলার নথিপত্র দুই মাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছে। খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ফাইল পাওয়ার পরে তার (খালেদা) জামিন আবেদন শুনানি করবেন আদালত।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে আসা প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার আসামির বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর নিম্ন আদালতের সাত বছরের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জমা দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর তিন আসামিকেও একই দণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের ব্যক্তিগত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সহকারী সচিব মনিরুল ইসলাম। তাদের প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ট্রাস্টের নামে ঢাকা শহরে থাকা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রায়ত্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

হারিছ চৌধুরী পলাতক থাকলেও কারাগারে থাকা অপর দুই আসামি জিয়াউল ও মনিরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় রায় পড়া শুরু করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এ সময় আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

প্রসঙ্গত গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। পরে আপিলে এই মামলায় খালেদা জিয়ার ১০ বছর কারাদণ্ড হয়।

পিবিএ/এমআই

আরও পড়ুন...