পিবিএ,খেলাধুলা: আগামী ৩০ মে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসে শুরু হতে যাচ্ছে আইসিসি বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর। মেগা এ ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী দশটি দল ইতোমধ্যেই কম বেশি দলের কম্বিনেশন ঠিক করেছে। অধিকাংশ দলই ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পজিশন স্থির করেছে। কিংবা কিছু কিছু পজিশন নির্ধারণে চিন্তা-ভাবনা করছে। সম্ভবত এই প্রথমবার টুর্নামেন্টে কোনো দলকে আন্ডারডগ হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না।
টিম কম্বিনেশনের বিষয়ে বলতে গেলে প্রত্যেক দলেই কমপক্ষে একজন ভালো অলরাউন্ডার আছে যিনি ব্যাট-বল হাতে ম্যাচ জেতাতে সক্ষম। অলরাউন্ডার বলতে কেউ কেউ ব্যাটিং, কেউবা বোলিং আবার কেউ বা জেনুইন অলাউন্ডার যিনি কিনা ব্যাটিং-বোলিং উভয় বিভাগেই পারদর্শী।
একজন জেনুইন অলাউন্ডার সব দলের জন্যই বিরাট এক আশীর্বাদ, বিশেষ করে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে। ম্যাচের অবস্থা বিবেচনায় তারা অধিনায়কের কাছে একজন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারের ভূমিকা পালন করে থাকে।
এবার আমরা আসন্ন বিশ্বকাপে পাঁচজন জেনুইন অলরাউন্ডারের বিষয়ে আলোচনা করবো।
জেসন হোল্ডার-ঃ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৫ বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কত্ব পাওয়া জেসন হোল্ডার অনেক বেশি পরিপক্ক একজন খেলোয়াড় ও অধিনায়কে পরিণত হন। খেলোয়াড় ও বোর্ডের মধ্যকার বিভিন্ন ঝামেলা, বিতর্ক এবং পূর্ণ শক্তির দল না পাওয়া সত্ত্বেও গত কয়েক বছরে তিন ফর্মেটেই দলের সেরা পারফরমারদের একজনে পরিণত হয়েছেন হোল্ডার।
ম্যাচের চাহিদা অনুযায়ী শেষ দিকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবং বড় পার্টনারশীপ গড়ে তোলার সক্ষমতা হোল্ডারকে বিশেষ কিছুতে পরিণত করেছে। কখনোই হার মানা যাবেনা মানসিকতার হোল্ডার ব্যাট ও বল হাতে সামনে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। অন্য খেলোয়াড়রা ব্যর্থ হলেও প্রতিটি ম্যাচেই নিজের পারফরমেন্স দিয়ে দলকে অনুপ্রাণীত করেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রমের ফল পেতে শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ধীরে ধীরে উন্নতি করছে এবং নিজেদের দিনে তারা যে কোন দলকে হারাতে সক্ষম। একজন খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে ধারাবাহিকতা ও উদ্দিপনা পূর্ণ পারফরমেন্সের মাধ্যমে দলের অগ্রগতির মূল কৃতিত্বের দাবিদার হোল্ডার।
একজন অলরাউন্ডার হিসেবে বর্তমানে ক্যারিয়ার সেরা ফর্মে আছেন হোল্ডার। তার নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিরে পেতে পারে হারানো গ্যেরব। নিশ্চিতভাবেই আসন্ন বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের একজন হবেন হোল্ডার।
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম-ঃ ধারাবাহিক না হলেও আন্তর্জাতি ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার পর থেকে ব্যাট-বল উভয় ক্ষেত্রেই একটা বিপ্লব ঘটিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের এ অলরাউন্ডার। মাত্র ২৮ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১১০ দশমিক ৪৭ স্ট্রাইকের মালিক ডি গ্র্যান্ডহোম একজন নিজেকে একজন গুরুত্বপূর্ণ ফিনিশার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বেশ কয়েকটি ম্যাচে একাই দলকে জয় এনে দিয়েছেন তিনি।
বিশেষ করে সিম সহায়ক পিচে বল হাতে যে কোন ব্যাটসম্যানের জন্য একটা বড় হুমকি ডি গ্র্যান্ডহোম। আন্তর্জাতিক এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে(আইপিএল) নিয়মিত উইকেট পাচ্ছেন তিনি।
স্বভাবসিদ্ধভাবেই ইংল্যান্ড কন্ডিশন পেস সহায়ক। তাই আসন্ন বিশ্বকাপে কিউই দলের মূল্যবান সম্পদ হবেন ডি গ্র্যান্ডহোম। ব্যাট হাতে নির্ভরযোগ্য ফিনিশার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সাথে সাথে প্রয়োজনের সময়ে একজন পিঞ্চ হিটারও তিনি।
ডি গ্র্যান্ডহোম থাকায় নিউজিল্যান্ড দলটিও বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাট-বল হাতে তার পারফরমেন্স কিউইদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বকাপে দলের ভাগ্য নির্ধারনের একজন হবেন ডি গ্র্যান্ডহোম।
সাকিব আল হাসান-ঃ বাংলাদেশের এযাবতকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। নিৎসন্দেহে এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে সেরা ও সবচেয়ে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারদের একজন সাকিব আল হাসান। আইসিসি ওয়ানডে অলরাউন্ডার তালিকায় বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক। বর্তমানে বাংলাদেশ দলে থাকা সবচেয়ে অভিজ্ঞদের একজন সাকিব এবং টাইগারদের ব্যাটিং স্তম্ভ তিনি।
পিবিএ/এমএস